জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ এর চরিত্রগত কোন প্রার্থক্য নেই। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বৈরতন্ত্রে চলছে। দেশের মানুষ সঠিক কথা বলতে ভয় পায়। দেশের মানুষ চেয়ে আছে তৃতীয় শক্তির দিকে। জাতীয় পার্টি হতে পারে সেই বিকল্প শক্তি। এজন্য দলীয় নেতা কর্মীদের আরও সংগঠিত হওয়ার আহবান জানান তিনি।
জিএম কাদের বলেন, ৯১ এর পরের সরকার গুলো এরশাদের নাম মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্ত পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর মৃত্যুর পরও তার নাম মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি। তার চারটি জানাযায় অভূতপূর্ব লোক সমাগম প্রমান করেছে, তিনি কত জনপ্রিয়। তিনি যতবার যত আসনে নির্বাচন করেছেন সবকটিতেই জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কোন নৈতিক পার্থক্য নেই। দূর্ণীতিতে বিএনপি চারবার, আওয়ামীলীগ একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিএনপি দেশে প্রথম বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু করেছে। বিএনপি গনতন্ত্রের কথা বলে অথচ গনতন্ত্রকে হত্যা করেছে তারা। ৯০-৯১ সালের পর থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এরশাদের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে মূল্যায়ন করছে। উপ-নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচনে আমাদের অবহেলা করছে। আমাদের সাথে চাকর-বাকর ও দাসী-বান্দির মতো আচরণ করছে।
তিনি বলেন, আসন্ন রমজান। দ্রব্যমূল্যে দিশেহারা মানুষ। নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য চরমে। উন্নয়নের কথা বলে দেশের মানুষকে গলা টিপে মারছে। সামনে যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ আরও বেড়ে যায় তাহলে কি হবে আল্লাহ জানেৃ ভবিষ্যৎ কি হবে?
জিএম কাদের আরো বলেন, বাংলাদেশে এখন মাত্র তিনটি দল আছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। নির্বাচনের সময় তিনটি জোট হবে। একটি সরকার বিরোধী, আরেকটি সরকারের। বর্তমান সময়ে বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে রয়েছে। সুতরাং নেতৃত্ব জাতীয় পার্টির কাছে আসতে পারে। তাই তিনি জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মীকে সংঘবদ্ধভাবে থাকার আহ্বান জানান।
তিনি মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কিং অব ফেনী কমিউনিটি সেন্টারে ফেনী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জেলা আহবায়ক মোতাহের হোসেন চৌধুরী রাশেদ এর সভাপতিত্বে, মুজিবুর রহমান ও জহির মজুমদার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জেনারেল (অব)মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় পার্টি মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক নাজমা আক্তার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাঈদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এমরান হোসেন মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, জাতীয় ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, এ্যাডভোকেট রবিউল হক রবি, শাহরিয়ার ইকবাল ও জাসদ কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক শিরিন আক্তার এমপি , প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে মোতাহের হোসেন চৌধুরী রাশেদকে সভাপতি ও জহির উদ্দিন মজুমদার ভিপি জহিরকে সাধারণ সম্পাদক নাম ঘোষণা করেন।