রমজানের শুরু থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। কমবেশি সব পণ্যের দামই বেড়েছে। পাইকারী বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে দাম আরও বেশি। বিশেষ করে রমজানে যেসকল পণ্য বেশি ব্যবহৃত হয় এসব পণ্যের দাম বেশি বেড়েছে। ছোলা, চিনি, আটা, ময়দা, মাছ, মাংশ সবকিছুরই দাম বাড়তি। তবে দুয়েকটি পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

অতিরিক্ত দামে বাজার করতে গিয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত অনেকেই পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অনেকেই দাম শুনে কেনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।

সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জেলার বাজারে প্রকারভেদে চাল ৪৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোলা প্রতি কেজি ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা, মসুর ডাল প্রতি কেজি ১১০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা , চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, আটা ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, ময়দা ৩৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, বুটের ডাল ৮৫ টাকা। সোয়াবিন তেল ৭৫০ টাকা (৫ লিটার), সোয়াবিন তেল ৩১০ টাকা থেকে ৩৬০ টাকা (২ লিটার), সোয়াবিন তেল ১৬০ (১ লিটার) টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সোয়াবিনের হাফ লিটার, ১ লিটার ও দুই লিটারের বোতল উধাও। তবে ৩ থেকে ৮ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। মাংস ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি জানান, সকল মাংশের দামই বেড়েছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গরুর মাংস ৬৪০ টাকা থেকে ৬৮০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি হালি ডিম ৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগী ব্যবসায়ী মোজাহার হোসেন জানান, প্রতি কেজি দেশী মুরগী ৪৭০ টাকা, পাকিস্তানী মুরগী ২৯০ টাকা, ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৪০ টাকা কেজি দর্ধেসঢ়; বিক্রি হচ্ছে।
জেলা শহরের মাছ ব্যবসায়ী ফজলুল করিম জানান, রুই মাছ ২৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ২২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, মিরকা ২০০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা, কাতলা ২২০ টাকা খেকে ৩০০ টাকা, ব্রিগ্রেড ২১০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির খুচরা ব্যবসায়ী আসিরুল ইসলাম জানান, বেগুন প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, শশা ৪৫ টাকা, ঢেড়শ ৬০ টাকা, সজনা ৮০টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ২৪ টাকা, গাজর ২০ টাকা, কুমড়া ২২টাকা, ডাটা ১৫ টাকা, আলু ১২ টাকা। এছাড়া কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, পেয়াজ ৩০ টাকা, রশুন ৪০ টাকা, পাট শাক ১৫ টাকা, পুইশাক ১০ টাকা, লাউ শাক ২০ টাকা, কেজি বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে লেবু ৩০ থেকে ৪০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচা বাজারের পণ্যের দাম কমবেশি বা উঠানামা করে।

জেলা শহরের মসলা ব্যবসায়ী জাহিদ ষ্টোরের সরফরাজ হোসেন রাজু জানান, মসলার মধ্যে জিরার দাম একটু বেশি বেড়েছে। এছাড়া মসলা আইটেমের সকল পণ্যে কেজি প্রতি ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।

পঞ্চগড় বাজারে ক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, নিত্যপণ্যের সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কারো কোন কথাই কর্ণপাত করছেন না ব্যবসায়ীরা। সরকারি বেসরকারিভাবেও দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।

আনজু আরা বেগম নামে এক ক্রেতা জানান, রমজানের আগে থেকে সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে কি কারো কোন পদক্ষেপ দেখছি না। আমাদের তো বিল বেতন বাড়েনি আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। কেনাকাটায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, বাজার দর নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালতে জেল, জরিমানা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদেরকে সচেতন করা হচ্ছে।