সর্বশেষ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |
২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |
উপজেলার পান্টি ডিগ্রী কলেজ মাঠে শুক্রবার সকালে সাপ্তাহিক হাটে সরেজমিনে গেলে কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে তাদের খচর হয়েছে ২০-৩০ হাজার টাকা। এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা মণের মধ্যে। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠছে না।
পেঁয়াজ চাষীদের দাবি, আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ হয় এতেই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাই সরকারের উচিত ভারতের এলসি পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা।
হাটে থাকা পেঁয়াজ চাষী, ব্যবসায়ী ও হাট পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবছর প্রতিকেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। আর বর্তমান প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা উৎপাদন খরচের তুলনায় বর্তমান বাজার দর কয়েক গুণ কম। দাম কম থাকায় অনেক কৃষক পেঁয়াজ বিক্রি না করে ফিরে গেছেন।
সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা যায়, কেনাবেচা প্রায় শেষ। ব্যবসায়ীরা ক্রয়কৃত পেঁয়াজ মজুদ ও বিক্রয়স্থলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করছে। কিছু সংখ্যক কৃষক দামের আশায় পেঁয়াজ নিয়ে বসে আছেন। পান্টি এলাকায় বিভিন্ন সড়কে পেঁয়াজ বিক্রি না করে ফেরত নেওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।
কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। সার, ওষুধ, বীজ, সেচ, শ্রমিকের দাম দিয়ে খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা। হাটে পেয়াজের দাম কম। খরচের টাকা উঠছেনা। পেঁয়াজ বিক্রি করলাম ৫০০ টাকা মণ।
কাঞ্চনপুর গ্রামের কৃষক চঞ্চল শেখ বলেন, বিক্রির জন্য ২৭ মণ পেঁয়াজ এনেছিলাম হাটে। কিন্তু দাম খুবই কম। তাই ফেরত নিয়ে যাচ্ছি। পেঁয়াজ এত অখাদ্য হয়ে গেছে যে, ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক আমজাদ উদ্দিন বলেন, ১২ মণ পেঁয়াজ বিক্রির জন্য হাটে এনেছিলাম। কিন্তু দাম নাই পেঁয়াজের। তাই না বেচে ফিরে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ হয় এতেই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাই সরকারের উচিত ভারতের এলসি পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ৪৫০ টাকা মণ পেঁয়াজ কিনেছি। আকার ও মানভেদে প্রতি মণ ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা পড়েছে। মালগুলো আজই ট্রাকে করে কুমিল্লা নেওয়া হবে।
পান্টি সাপ্তাহিক পেঁয়াজ হাটের ইজারাদার এইচ এম আব্দুল্লাহ টিপু বলেন, আজ হাটে ৬ থেকে ৭ হাজার টন পেঁয়াজের আমদানি হয়েছিল। কিন্তু দাম কম থাকায় অসংখ্য কৃষক বিক্রি না করে ফেরত চলে যান। প্রতিকেজি পেঁয়াজের মানভেদে ৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কুষ্টিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম বলেন, এবছর উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। এবার প্রতিকেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের ২৩ থেকে ২৫ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পেঁয়াজের বাজারদর উৎপাদনের খরচের অনেক কম। এভাবেই চলতে থাকলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
ফেজবুকে আমাদের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন ।
আরও খবর জানতে ক্লিক করুন।
বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
