নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ায় জমি লিখিয়ে নিতে এক বৃদ্ধকে শেকল বন্ধী করে রাখার অভিযোগে আটক বৃদ্ধের স্ত্রী হামিদা আক্তার (৬০) ও বড় ছেলে সেলিম মিয়া (৪২) কে রবিবার নেত্রকোনা কোর্টে সোপর্দ করেছে কেন্দুয়া থানার পুলিশ।

এদিকে উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধ সাবেক রেলওয়ে কর্মচারী আব্দুর রাজ্জাক (৮০) কে মেয়ে নুরুন্নাহার ও জামাতা মো. অলিউল্লাহর হেফাজতে দেয়া হয়েছে।

এদিকে রবিবারই বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক নিজেই কোর্টে গিয়ে স্ত্রী এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন জিম্মায় দেয়া জামাতা অলিউল্লাহ।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

কেন্দুয়া থানার ওসি মো. আলী হোসেন পিপিএম বলেন, গতকাল মানবাধিকার কর্মীদের কাছে শুনে আমরা বৃদ্ধকে তার মেয়ের কাছে দিয়েছি।

এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে থানায় স্ত্রী ও ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। দুজনকে বাড়ি থেকে আটক করেছি। ওদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকী দুই ছেলে পলাতক। বৃদ্ধের বাড়ি উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রামে।
স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেত্রী কল্যাণী হাসান বলেন, আমাকে জানিয়েছে মানবাধিকার কর্মী শাহ আলী তৌহিক রিপন।

তাকে রিনা নামের আরেক মেয়ে বলেছে। আমরা আগে জানতে পারিনি। ওই বৃদ্ধ নাকি বাইরে বাইরে ঘুরেন। ছেলেরা ভয়ে থাকে জমি লিখে দিয়ে দেয় কিনা কাউকে। তাই শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে।

১০ কাঠা জমি রয়েছে উনার। এগুলো লিখে নিতেই বেঁধে রাখেন। দেড়মাস ধরে বেঁধে রাখার কথা শুনেছি।

এ ব্যাপারে আশ্রয় দেয়া বৃদ্ধের মেয়ের জামাই মো. অলিউল্লাহ বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী বিগত দুই বছর ধরেই শশুর বাড়ি যাই না লজ্জায়। উনাদের কার্যকলাপ খুবই লজ্জাস্কর। আমার শশুরের মাত্র ৫ কাঠা জমি রয়েছে। তিনি কখন কি বলেন জানেন না।

উনারা এই ঝগড়া করেন আবার মিলে যান। এসবের কারণে আমরা একটু দূরে থাকি। সামাজিক ভাবে লজ্জার বিষয়। আমার শশুর সব জমিই বিক্রি করে দিয়েছেন। মাত্র ৫ কাঠা রয়েছে।

এখন শনিবার আবার তাদের মাঝে সমস্যা হলে আমার কাছে এনে দিয়েছে। এখন রাখছি। রাতে মামলা দিলে পুলিশ দুজনকে আটক করে নিয়োিছলো। কিন্তু রাত থেকেই শশুর বলছেন ওদেরকে কেন আটক করেছে। ওরা কোথায়। তিনি সকালে গিয়ে আবার ছাড়িয়ে আনেন। আমরা বললাম মামলা দিলেন। ওরা জেলে থাকুক। কিন্তু তখন বলেন অন্যরা দিয়েছে। তিনি নাকি দেননি।

ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল কবীর খান বলেন, এরকম আগেও একবার শুনেছি। মানবাধিকারের তারাও বলেছেন। আমরা গিয়ে কিছু পাইনি। স্বাভাবিক দেখেছি। বৃদ্ধকে জিগেস করেছি কিছু বলেননি। হয়তো ওরা তখন ছেড়ে রেখেছে। এটাও হতে পারে বলে তিনি জানান। মানুষ গেলে আবার হয়তো বেঁধে রাখে। এবার হয়তো বাঁধা পেয়েছেন তারা।