Top
সর্বশেষ
শতাধিক পণ্য সেবায় শুল্ক–কর বাড়লো পুঁজিবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধানে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠনের দাবি আকুর বিল পরিশোধের পর কমেছে রিজার্ভ ‘আর মাত্র কিছুদিন! এরপর জনগণ আপনাদের নিশ্চিহ্ন করে দিবে’ গ্যাসের দাম ১৫২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব: শিল্প-বাণিজ্যে অশনিসংকেত দেখছেন ব্যবসায়ীরা ‘৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়াদের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন’ রাশিয়ার সামরিক বিমানঘাঁটির তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা ২২৭৬ নেতাকর্মীকে গুম-খুনের অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিএনপি মালয়েশিয়ায় ৬৪ বাংলাদেশি অভিবাসী আটক রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ক্রম ঠিক করতে আপিল বিভাগে আবেদন, শুনানি ১৬ জানুয়ারি

সহসাই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালুর সম্ভাবনা নেই

১৯ জুন, ২০২২ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
সহসাই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালুর সম্ভাবনা নেই
মো. আব্দুল লতিফ, ঠাকুরগাঁও :

“অবশেষে ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দর চালু হচ্ছে” এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন স্তর থেকে অভিনন্দনের বন্যা বয়ে গেলেও ঠাকুরগাঁওয়ের-১ আসনের সংসদ সদস্য স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, “আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন তারপর বিমানবন্দর। ধারাবাহিকভাবে সব উন্নয়নই হবে। তবে এজন্য সময় লাগবে”। আর ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক বললেন “সহসাই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালু হয়ে যাচ্ছে এমন ভাবার কোন কারণ নেই”।

প্রায় ৪২ বছর ধরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটি। ১৯৪০ সালে বৃটিশ সরকার ঠাকুরগাঁও শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের পাশে মাদারগঞ্জ এলাকায় ৫৫০ একর জমির উপর এ বিমানবন্দরটি তৈরি করে। এ বিমান বন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩ কি.মি.। স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এর যোগাযোগ ছিল কিন্তু ১৯৮০-৮১ সালে লোকসানের অজুহাতে এ বিমান বন্দরটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণের দাবির মুখে ১৯৯৪ সালে এ বিমান বন্দরটি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। সে জন্য ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রানওয়ে মেরামতসহ কিছু সংস্কার কাজ করা হয়। টাকা খরচ হয় ঠিকই, কিন্তু বিমানবন্দর আর চালু হয়নি। পরবর্তীতে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ বিমান বন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে উদ্যোগও ভেস্তে যায়। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ঠাকুরগাঁওয়ে এসে বিমানবন্দর পরিদর্শন করে ১ বছরের মধ্যে চালু করার আশ্বাস দেন। তিনিই আবার পরের বছর ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে এসে বলেন, বিমানবন্দর চালু করা সম্ভব নয়।

বর্তমানে বিমানবন্দরের রানওয়েটি স্থানীয় গ্রামবাসী যে যার মত করে ব্যবহার করে আসছে। সারা বছরই এর রানওয়েতে ধান, গম ও ভুট্টা সহ গৃহস্থালি পণ্য সামগ্রী শুকানোর কাজ চলছে। কেউ কেউ আবার ভুট্টা মাড়াইয়ের ম্যাশিন পর্যন্ত বসিয়ে নিয়েছেন এখানে। ছোট ছোট ছেলেরা রানওয়েটিকে ক্রিকেট খেলার পিচ হিসেবেও ব্যবহার করছে। ঈদ, পূজো সহ বছরের বিভিন্ন বিশেষ দিনগুলো শিশু ও তরুণ তরুণীরা রানওয়েটি ভ্রমণের জায়গা হিসেবেও বেছে নিতে শুরু করেছেন।

এমতাবস্থায় যখন ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর “অবশেষে চালু হচ্ছে” বলে সংবাদ প্রচার হয় তখন বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টি বিবেচনা করতে গিয়ে অনেকেরই খটকা লাগে। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন “বিমানবন্দর সম্পর্কে আমি একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছি মন্ত্রণালয়ে। আমার এব্যাপারে কারিগরী জ্ঞান নেই। আদৌ এটা চালু করা সম্ভব কি না তা তারাই বলতে পারবেন। তবে সহসাই এটা চালু হচ্ছে এমন ভাবার কোন কারণ নেই।

বিষয়টি সম্পর্কে ঠাকুরগাঁও -১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন “সবার আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণ অর্থাৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ইপিজেড ও ফুড প্রসেসিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। এই উন্নয়নগুলি ধারাবাহকভাবে হবে। তারপর মেডিক্যাল কলেজ ও বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। বিমানবন্দর শীঘ্রই চালু হবে এমন ধারণা ঠিক নয়।”

এতে সহজেই অনুমান করে নেয়া যায় দু’চার বছরের মধ্যে বিমান বন্দর চালুর সম্ভাবনা ক্ষীণ। ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালু হলে এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে নিঃসন্দেহে। নানা প্রতিবন্ধকতায় বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে এ সম্ভাবনা। ঠাকুরগাঁওবাসীর দাবি এবং সম্ভাবনার দিকটি বিবেচনায় এনে ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটি চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এমনটিই আশা করেন সবাই।

শেয়ার