বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, পদ্মা সেতু আমাদের সাহস, সক্ষমতা, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশ। আজকে প্রধানমন্ত্রী দিলেন পদ্মা সেতু।

শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং মুক্তি পাবার পথও দেখিয়েছিলেন। কিন্তু একাত্তরের ঘাতক দল বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলো। পরে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ফিরে এসেছিলেন। শুরু করেছিলেন তাঁর নিরন্তর সংগ্রাম। গত ৪১টি বছর ধরে ক্রমাগত তিনি সংগ্রাম করে চলেছিলেন পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্যে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

তিনি বলেন, পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তিনি বাঙালি জাতিকে আরও নতুন অনেক স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। যে স্বপ্নই যখন দেখিয়েছেন পিতার মত সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে যা যা দরকার তা করেছেন। তাঁরই নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয় ও ডিজিটাল বাংলাদেশ। আর তার জন্যেই চাঁদপুরে বসে পদ্মা পাড়ের প্রতিটি ঘটনা আমরা উপভোগ করতে পেরেছি।

দীপু মনি বলেন, আজকে সেতুমন্ত্রী বলেছেন শেখ হাসিনার কাছে যতবার পদ্মা সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ হিসেবে প্রস্তাব গিয়েছে, তিনি ততবারই তা প্রত্যাখান করেছেন। তিনি তাঁর নাম এ বিশাল অর্জনের সঙ্গে যুক্ত করতে চাননি। পদ্মা সেতু আমরা বলছি বিজয়ের প্রতীক, অপমানের প্রতিশোধ, আমাদের সাহস, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। আর এ সবকিছুর প্রতীক তো একজন, তিনি শেখ হাসিনা।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মশিউর রহমান। তিনি বলেন, শুনেছি পদ্মায় চর জাগে। আজ পদ্মায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস জেগেছে। পদ্মা বাংলাদেশের দক্ষতা ও সৃজনশীলতাগামী চ্যালেঞ্জ জেগেছে। অনেকে অনেক কিছু দিয়ে পদ্মাকে ব্যাখ্যা করে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এই যে সেতু হয়েছে তা আর কিছু না, তা বঙ্গবন্ধুর কন্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করার একটা বড় স্তম্ভ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান প্রমুখ।

আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক এম আর ইসলাম বাবু।

উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়ে আবুল খায়ের পাটোয়ারি প্রমুখ।

এর আগে সকাল ৯টায় চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে সরকারি বিভিন্ন দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতারা ও সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হন।

সকাল সোয়া ৯টায় ওই মাঠ থেকে একে একে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, মিশন রোড ও স্টেডিয়াম রোড হয়ে স্টেডিয়ামের আভ্যন্তরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে সবাই আসন নেন।

শোভাযাত্রায় নেতৃত্বে দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।