চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারায় পৃথক অগ্নিকাণ্ডে পুড়লো ৩৪ বসতঘর। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অর্ধকোটিরও বেশি। জেলার বাঁশখালীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩২ বসতঘরের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টি পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার সময় বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের পশ্চিম চাম্বল বাংলাবাজার সংলগ্ন জলদাশ পাড়ায় বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আগুন মুহূর্তেই সবদিকে ছড়িয়ে পড়লে কোনো কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ‘ওই এলাকার জলদাশ পাড়ার মিলন জলদাশ এর বাড়ি থেকে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। ঘনবসতি হওয়ায় মুহূর্তেই আগুন সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৩২ বসতঘরের প্রায় ৭০ টি পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরবর্তী বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে তাদের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘর গুলো হল- মৃদুল দাশ, বাদল দাশ, সমীরণ দাশ, সম্পদই দাশ, সুকুমার দাশ, রাজকুমার, সুধীর দাশ, স্বপন দাশ, রঞ্জিত দাশ (দুই পরিবার), হরি দাশ, রতন দাশ, পরিতোষ দাশ, সাগর দাশ (পাঁচ পরিবার), সুরেশ দাশ, হরিপদ দাশ, গুরুধন দাশ, মধুরাম দাশ, শ্রী নন্দ দাশ, সন্ধ্যা মোহন দাশ, সমীরণ দাশ (দুই পরিবার), গোপাল দাশ (৪ পরিবার) মতিলাল দাশ (দুই পরিবার), রাম প্রসাদ (৪ পরিবার), ভাটি রাম দাশ (তিন পরিবার), রাখাল দাশ, যদু রাম দাশ সহ ৩২ বসতঘর।

বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন এর টিম লিডার নুরুল বাশার বলেন, ‘চাম্বল ইউপি’র বাংলাবাজারের অদূরে পশ্চিম চাম্বল জলদাশ পাড়ায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমাদের ফায়ার সার্ভিস টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছান। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা ধরে আমরা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি।

বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন এর ইনচার্জ আযাদুল ইসলাম ‘ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩২ বসতঘরের সর্বস্ব পুড়ে যায়। অনেকগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

অপরদিকে আনোয়ারা উপজেলায় বৈদ্যুতিক মিটার থেকে আগুন লেগে দুই বসতবাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর বারশত ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের দুধকুমড়া গ্রামের মরহুম আমির হোসেন দুবাশীষের বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সালাউদ্দিন নামের এক যুবক জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে পার্শ্ববর্তী এলাকায় আগুনের খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মরহুম দেলোওয়ার চৌধুরী ও ইদ্রীস চৌধুরী’র বসতবাড়ি পুড়ে গেছে।

আগুনের সুত্রপাতের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাসিনা বেগম বলেন, বৈদ্যুতিক মিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তিনি আরো জানান, কয়েকদিন আগে আমার মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়াতে এসেছে। আগুন লেগে আমার মেয়েদের ৪-৫ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ৫লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশের ঘরেও তিন লক্ষ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন লিডার কামরুল হাসান বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছা দেখি স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ শেষ পর্যায়ে। পরবর্তীতে আমাদের ২০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।