নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলার মতো শরতের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ শ্বেত শুভ্র কাশফুলে ছেয়ে গেছে প্রকৃতি। আর তাই শেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল সেজেছে প্রকৃতির শুভ্র চাদর কাশফুলে। বিশেষ করে প্রতিটা নদীর পাড়ে কাশফুল যেনো একেকটা সাম্র‍াজ্য। তাই এসব জায়গায় প্রতিদিনই ভিড় করছে প্রকৃতিপ্রেমীরা। কাশবনে ঘুরতে এসে আনন্দঘন মুহুর্তগুলো করছেন ক্যামেরাবন্দী।

শেরপুর শহরের বাটারাঘাট, কসবা কাঠগড়, সদরের হরিণধরা, নকলা উপজেলা নারায়নখোলার সিকদারপাড়া ঘাট ও বক্ষপুত্র‍ নদীর পাড়সহ বিভিন্ন নদ-নদীর আশপাশে ছেঁয়ে গেছে কাশফুলে। নীল আকাশের নিচে এ যেনো সাদা মেঘের ভেলা। তাইতো শহরের কোলাহল থেকে একটু মনকে জুড়াতে প্রিয়জনকে নিয়ে প্রতিদিন ভিড় করছে এসব জায়গায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফুল ফোটার পর থেকেই সকাল ও বিকেলে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলবেঁধে লোকজন কাশবনে বেড়াতে আসছেন। তবে বিকেলে লোকসমাগম একটু বেশি হয়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি বছর কাশফুল ফুটলেও এবার বেড়েছে কয়েকগুণ। আর এসব কাশবন কিছুদিন পর বিক্রি করে বাড়তি টাকাও পাবেন তারা।

মমতাজ মিয়া বলেন, আমার পুকুরের পাড়ে এ কাশফুল হইছে। মেলা মানুষ আহে দেকবার। খুব ভালা লাগে। আর কিছুদিন পর এইগুলা বেইচ্চা টাহাও পামু।

কবির মিয়া বলেন, কাশবনে অনেকে ঘুরতে আসে। আমরাও তাদেরকে সহায়তা করি। আর এই কাশফুল হইছে বলেই আমি একটা দোকান দিয়েছি। ভালোই মানুষ আসে এখানে। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।

এক ঘেয়ামি নাগরিক জীবনে শরৎতের এই শুভ্র কাশফুল প্রশান্তি বয়ে এনেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে-প্রাণে। তাই কাশবনে ঘুরতে এসে আনন্দঘন মুহুর্তগুলো করছেন ক্যামেরান্দী।

ঘুরতে আসা শিলা বলেন, আমরা আসলেও শহরে পরিবেশে এখন এই কাশফুল দেখতে পাই না। এবার অনেক কাশফুল হইছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। আমরা সবগুলা জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেখছি। আর মনকে প্রশান্তি দিচ্ছি।

বিথী আক্তার বলেন, এই কাশফুল গ্রামে বেশি দেখা যায়। কিন্তু এখন গ্রামের পাশাপাশি শহরেও হচ্ছে। এতে আমাদের বিনোদনের জায়গাও সৃষ্টি হয়েছে।

শোয়াইব রহমান বলেন, আমরা শুধু শহর নয় বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ও নদীর পাড়ে যে কাশফুল ফুটেছে তা দেখেছি।এরমধ্যে আমার কাছে নকলার নারায়নখোলার কাশফুলের যে সমারোহ হয়েছে সেটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে এবং সেখানের মত কাশফুল আর কোন জায়গায় হবে কিনা জানি না।

প্রস্ফুটিত ফেইসবুক গ্রুপের আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার শখ ঘুরাঘুরি আর ড্রোন দিয়ে ভিডিও করা। আমি ঘুরতে ভালোবাসি। আমি নকলা নারায়নখোলার যে কাশবন দেখেছি তা আমার প্রথম দেখা এত বড় বাগান। এইরকম করে কাশফুল হয়েছে আগে কখনো দেখি নাই। খুব ভালো লাগছে কাশফুল দেখে।

অন্তর মিয়া বলেন, আমি আগে শেরপুরে এমন কাশফুল হয়েছে দেখি নাই। এবার খুব ভালো লাগছে। অবসর সময়ে কাশবনে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ছবি তুলতে যাচ্ছি।

জাবির হাসান খান পরাগ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাশফুলের ছবি দেখে শহরের বাইরে থেকে একটু নিরিবিলি সময় পার করবার জন্য বন্ধু-বান্ধব মিলে এখানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে।

সোহানুর রহমান সোহাগ বলেন, শহরের কোলাহলময় জীবন থেকে একটু আলাদা সময় কাটাতে কাশবনে আসছি। এতো কাশফুল ফুটেছে এবার ভাবাই যায় না। বউ-বাচ্চা নিয়ে খুব ভালো সময় কাটাচ্ছি।