চট্টগ্রাম থেকে সরকার-পতনের আন্দোলনের যে স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়েছে তা আজ থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এর ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার।
তিনি বুধবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
সমাবেশে বিপুল জনসমাগমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, মহাসমাবেশে আসার সময় আমাদের নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এরপরও আজকের জনস্রোত থামানো যায়নি।
চট্টগ্রামের মানুষ ভয় পায় না জানিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনারা দরিয়ার মানুষ। উত্তাল তরঙ্গেও আপনারা সাম্পান নিয়ে বুক ফুলিয়ে এগিয়ে যান। কোনোকিছুই আপনাদেরকে থামাতে পারে না। এসময় উপস্থিত লোকজনকে ভয় পান কিনা জানতে চাইলে সবাই সমস্বরে ‘না’ বলে জবাব দেন।
সর্বশেষ ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কোনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন গৃহিণী। গৃহকোণ থেকে বেরিয়ে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন গণতন্ত্রের মা। দেশের অলি-গলি চষে বেড়িয়েছেন গণতন্ত্রের সুর তোলে। এখন বলা হয় বেশি বাড়াবাড়ি করলে সেই নেত্রীকে আবার নাকি জেলে পাঠাবে তারা। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারকে ভয় পান না। বিএনপি নেতাকর্মীরা কারাগারকে ভয় পায় না।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ বন্দি। তিনি ঠিকমত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তারা আমাদের ভয় দেখান আমাদের নেত্রীকে আবার জেলে পাঠাবেন। আরে খালেদা জিয়া জেলকে ভয় পান না। আসলাম চৌধুরী ছয় বছর ধরে জেলে আছেন। এরা বিচারবিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবকে দলীয়করণ করেছেন। আজ সারাদেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ আর ছাত্রলীগের কর্মীরা জনগণের পকেট কেটে বিদেশে পাচারে সহযোগিতা করছে।’ তারা বলছে, দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। তেল কম খান, বিদ্যুৎ কম জ্বালান। আর আমরা বলি, তাহলে আপনারা ক্ষমতায় আছেন কেন? আজই পদত্যাগ করেন।’
মহাসমাবেশে তিনি সাফ জানিয়ে দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, দেশের মানুষ হতে দেবে না। যে নির্বাচন কমিশনকে ডিসি-এসপিরা মানে না সেই কমিশনের অধীনে কীসের নির্বাচন প্রশ্ন রাখেন মির্জা ফখরুল।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় ও আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক চসিক মেয়র বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি নেতা ইসরাক হোসেন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর হেলাল প্রমুখ।