জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তিনটি প্রতিষ্ঠান সবুজ কারখানার তালিকায় যুক্ত হওয়ার পর নতুন মাসে আরেকটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। সবশেষ সবুজ কারখানার তালিকায় জায়গা করে নেওয়া নতুন কোম্পানিটির নাম কেডিএস আইডিআর লিমিটেড। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট চারটি প্রতিষ্ঠান গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার তালিকায় যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রিন ফ্যাক্টরি সংখ্যা ১৮৭টি। যা দেশের তালিকা হিসেবে পুরো বিশ্বে সর্বোচ্চ সংখ্যা। তাছাড়া সম্ভাব্য সবুজ কারখানার তালিকায় আরও ৫৫০টির মতো কারখানার নাম রয়েছে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি) গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে।

বিজিএমইএর তথ্য মতে, বাংলাদেশে এখন গ্রিন ফ্যাক্টরি ১৮৭টি। এর মধ্যে প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ৬৩টি, গোল্ড ১১০টি, সিলভার ১০টি ও সার্টিফাইড চারটি। এর মধ্যে গত বছরে ৩০টি কারখানা স্বীকৃতি পায়। এর মধ্যে ১৫টি ছিল প্লাটিনাম ক্যাটাগরির। চলতি জানুয়ারি মাসে দুইটি প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে ও একটি গোল্ড ক্যাটাগরিতে গ্রিন ফ্যাক্টরির স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া প্রায় সাড়ে পাঁচশটির বেশি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি হতে রেজিস্ট্রেশন বা পাইপলাইনে রয়েছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বৈশ্বিক বাজারে যখন পোশাকের অর্ডার কমে যাচ্ছে, তখন এ ধরনের স্বীকৃতি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মনোবল বৃদ্ধি করে। এতে বাংলাদেশের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে সুবাতাস বইছে।

এর আগে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে জেএল ফ্যাশন ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লাটিনাম সনদ পায়। এই কারখানাটি গাজীপুর সদর ভবানীপুরে অবস্থিত। অন্যদিকে একই সময়ে জেকেএল কারখানাও গ্রিন ফ্যাক্টরির সনদ পায়। এটি চট্টগ্রামের কালুরঘাটে অবস্থিত। বিভিন্ন সূচকে কারখানাটির অর্জিত পয়েন্ট ৮৪। এছাড়া গত ২২ জানুয়ারি আমানত শাহ ফেব্রিকস ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে গোল্ড সনদ অর্জন করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল’ এ সনদ দেয়। বাণিজ্যিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনার ক্ষেত্রেও সনদ দেয় সংস্থাটি। তবে শিল্প কারখানার ভবন নির্মাণ থেকে পণ্য উৎপাদন পর্যন্ত সব পর্যায়ে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিশ্লেষণ করে সর্বোচ্চ মানের কারখানাকে এ সনদ দেওয়া হয়।

তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, সবুজ কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের গায়ে গ্রিন ট্যাগ সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ পণ্যটি সবুজ কারখানায় উৎপাদিত। বিশ্ব বাজারে ক্রেতার কাছেও আলাদা কদর রয়েছে এর। এতে বিদেশি ব্র্যান্ড এবং ক্রেতার কাছে আস্থা বাড়ে। উৎপাদিত পণ্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষিতেও এগিয়ে থাকা যায়। মূল কথা হলো এ সনদ দেশ ও পোশাকখাতের ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়াতে সহায়তা করে।

এর আগে গত বছর ৩০টি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরির স্বীকৃতি পায়। এর মধ্যে ১৫টি ছিল প্লাটিনাম ক্যাটাগরির। তাছাড়া ২০১৯ সালে ২৮টি কারখানা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। নতুন বছরে শুরুতেই চারটি সবুজ কাখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, সবুজ কারখানার তালিকায় বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া।