দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে (নারীদের) ঘরে রেখে আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যেতে পারে না। যদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পেতেই চান তবে আপনাকে সম্পূর্ন জনসংখ্যাকে সক্রিয় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমানে এসএমই খাতে আমাদের নারীদের অংশগ্রহণও ধীরে ধীরে বাড়ছে।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নেতৃত্বের ভূমিকায় নারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণের লক্ষ্যে রিং দা বেল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আমরা নারীদের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল চালু করেছি, বেনিফিশিয়ারি ওনার একাউন্টস পরিচালনার খরচ কমিয়েছি। আমরা বোর্ডে নারীদের অংশগ্রহণকেও প্রচার করছি।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব কো-অপারেশন করিন হেনচোজ পিগনানি বলেন, ডিজিটাল দুনিয়া থেকে নারীদের বাদ দিয়ে গত এক দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস করেছে। পদক্ষেপ না নিলে, এই লোকসান ২০২৫ সাল নাগাদ ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার হবে। আমাদের যৌথ অঙ্গীকারের প্রতীক আর্থিক, ব্যবসায়িক এবং ডিজিটাল খাতে জেন্ডার ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য আমরা কোনও মহিলা বা মেয়েকে আর পিছনে রাখব না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোঃ হাসান বাবু বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, লিঙ্গ সমতায় এবং বৈচিত্র্যকরণে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বিশেষ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষ ও উৎপাদনশীল ব্যবহারের সাহায্যে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, সরকারি পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস এবং টেকসই অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল আনতে পারে।

বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালের আইএফসি কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান বলেন, গবেষণায় দেখা যায় যে নারী প্রতিভা বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে কম ব্যবহৃত অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পদগুলির মধ্যে রয়েছে, যার কোন মানে নেই।

আইএফসির নিজস্ব গবেষণায় দেখা গেছে যে নেতৃত্বে আরও বেশি নারী ইতিবাচকভাবে উচ্চতর পরিবেশগত, সামাজিক, এবং গভর্নেন্স (ইএসজি) স্ট্যান্ডার্ডের সাথে সংযুক্তির ফলে ব্যবসায়িক কর্মক্ষমতা উন্নত হয় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমৃদ্ধ হয়। সেজন্য আমরা বাংলাদেশে স্টক এক্সচেঞ্জ, নিয়ন্ত্রক এবং এসইসিও এর মতো উন্নত অংশীদারদের সাথে লিঙ্গ বৈষম্য শনাক্ত করতে, বিভিন্ন সংকটে সাড়া দিতে এবং লিঙ্গ বৈষম্যের প্রসারণ রোধ করতে কাজ করছি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৩-এর থিম ছিল “ডিজিটাল: ইনোভেশন এন্ড টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি,” যা রূপান্তরকারী প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল শিক্ষার অগ্রগতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া নারী ও মেয়েদের স্বীকৃতি দেয় এবং উদযাপন করে।

এই ইভেন্টে এই বছরের থিমের উপর প্যানেল আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন প্রাভা হেলথ’র প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ার এবং সিইও সিলভানা কাদের সিনহা, এজিল মাইন্ডস গ্রুপের ডিরেক্টর এবং গ্রুপ সিওও জিশান কিংশুক হক, সহজ’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মালিহা কাদির, এবং সেবা.এক্সওয়াইজেড এর সিইও আদনান ইমতিয়াজ, এবং উদ্যোক্তা, বর্ণ আইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়াঙ্কা রানী সুর।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের বাংলাদেশ প্রতিনিধি (ইউএনজিসি) ফারুক সোবহান , উইমেনস ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট’র লিড (ডব্লিউইই) তপতী সাহা, ইউএন উইমেন, লোপা রহমান, পরিবেশ, সামাজিক ও গভর্নেন্স অফিসার, আইএফসি, এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন আইএফসি’র সিনিয়র অপারেশন অফিসার আশানি চানুকা এলেস।

ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন, (আইঅফসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসসি), ইউএন ওমেন, জাতিসংঘের গ্লোবাল কমপ্যাক্ট এবং সুইস স্টেট সেক্রেটারিয়েট ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (এসইসিও) এবং ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ এক্সচেঞ্জ-এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিপি/আজাদ