মানিকগঞ্জ শহর ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে অন্তত ১৫টি দোকানে মানিকগঞ্জ শহর ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। দোকানের মূল ফটকের সাটার ভেঙে অধিকাংশ দোকান থেকে নগদ অর্থ ও জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল। আজ সকালে সরেজমিনে ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে সন্দেহ ভাজন চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাতে দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে যান ব্যবসায়ীরা। পরে গভীর রাতের কোনো এক সময় জেলা শহরের প্রধান সড়ক শহীদ রফিক সড়কের পাশে (মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন) অবস্থিত সিটি ড্রাগ হাউজ, সবুজ ফার্মেসী, মায়ের দোয়া স্টেশনারী, দেশ লাইব্রেরি, স্যামসং মুঠোফোনের শোরুমে হানা দেয় চোরের ওই সঙ্ঘবদ্ধ দল। এ সময় দোকানের ফটকের শাটার ভেঙে সিটি ড্রাগ হাউজ থেকে ৩ হাজার টাকা, সবুজ ফার্মেসী থেকে ১৬ হাজার টাকা এবং দেশ লাইব্রেরী থেকে ৩ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

একই রাতে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের সামনে গঙ্গাধরপট্টি সড়কের পাশে অবস্থিত জ্ঞানোদা স্টেশনারী, মা জেনারেল স্টোর, শিকদার কমিউনিকেশন এবং খান ভ্যারাইটিজ স্টোরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একই কৌশলে দোকানের শাটার ভেঙে ভেতরে ঢুকে চোরেরা দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এ সময় একটি জেনারেল স্টোরের মালিক জানান, সিগারেট ও মোবাইল কার্ডসহ প্রায় এক লাখ টাকার জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা।

এদিকে দোকানের শাটার ভেঙে শহরের সরকারি মহিলা কলেজের হোস্টেল সড়কের পাশে তমাল রাইচ এজেন্সিসহ তিন দোকানে এবং গঙ্গাধরপট্টি সার্বজনীন দুর্গামন্দিরের সামনে সন্তোষের দোকানে হানা দেয় চোরের ওই সঙ্ঘবদ্ধ দল। এসব দোকান গুলো থেকে নগদ অর্থ ও জিনিসপত্র চুরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে একই রাতে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যাণ্ডের অদূরে পৌর এলাকার জয়রা সড়কে জুমা স্টোর নামের একটি মনোহারি দোকানের শাটার ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে চোরেরা। এসময় চোরেরা দোকানের শাটার ভেঙে এক হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে বলেও জানা যায়। এছাড়াও পৌর এলাকার মানরা এলাকায় একটি স্টেশনারী দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দোকান থেকে সিগারেট ও মুঠোফোনের সিমকার্ড চুরি হয়ে গেছে ।

এক রাতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এই গণচুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরে চুরির ঘটনাস্থলের এক পাশে সদর থানা এবং অপর পাশে শহর পুলিশ ফাঁড়ি। রাতে এতোগুলো দোকানে চুরির ঘটনা পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণেই ঘটেছে। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, শহর ফাঁড়ির পুলিশের দায়িত্ব পালনে অনীহা রয়েছে।

এবিষয়ে মানিকগঞ্জ টাউন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত শহরে টহল দিয়ে আসছি। একই রাতে এসব চুরির ঘটনার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, চুরি হওয়া অর্থ ও মালামালের পরিমাণ অল্প হলেও এতোগুলো দোকানে চুরির বিষয়টি দুঃখজনক। কয়েকটি দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে চোর চক্রের সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। আপাতত সন্দেহ ভাজন চারজনকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আটক করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই মূল চোর চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।