কোভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ; তার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ডলার রেট ছিল ৮০’র ঘরে, সেটি বেড়ে এখন অন্য জায়গায় এসেছে। তাছাড়া ভূ-রাজনৈতিক কারণেও দেশে কমছে অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি। সবমিলিয়ে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক। তিনি বলেন, কোভিড ছাড়া অন্যান্য দেশের মতো বাকি সব চ্যালেঞ্জে ভুগছে বাংলাদেশ।

‘দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি চাপে আছে’-আইএমএফের করা এমন মন্তব্যের জবাবে রোববার (৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজেমি সেন্টারে তিনি এসব কথা বলেন।

আইএমএফের শর্ত নিয়ে মুখপাত্র বলেন, আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে তার বেশিরভাগ পূরণ হয়েছে। তারা এতে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নিজস্ব পলিসি নিয়ে এগোচ্ছে। আবার আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সময় আছে। আমরা এই সময়ের মধ্যে সব করতে পারবো।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

তিনি বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আইএমএফ’র ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ডলার পেয়েছি আমরা। এরই মধ্যে আবারও বাংলাদেশ সফর করছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনাও হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের অনুমোদন করা ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। আগামী অক্টোবরে আরও একবার সফর করবে সংস্থাটি। এরপরেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

মেজবাউল হক জানান, বাংলাদেশের বর্তমানে মূল চ্যালেঞ্জ হলো রিজার্ভ ধরে রাখা। আমদানি ব্যয় এবং আকুর দায় পরিশোধে দেশের রিজার্ভ অনেকখানি কমেছে। তবে এর মাঝে আরও অর্থ সমন্বয় (রপ্তানি আয়, রিজার্ভ) হলে পুনরায় রিজার্ভ বাড়বে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সফরকে রিজার্ভ বাড়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ সফর করছেন। তিনি যেসব দেশে গেছেন সেসব দেশে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। তার সফরের পর রিজার্ভ (বিনিয়োগ) বাড়বে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পর চরম আকারের ডলার সংকটে পড়ে দেশ। যদিও ডলার সাশ্রয়ের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবুও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। বরং আমদানি বিল পরিশোধে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে। এখন দেশের রিজার্ভ ৩০.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এরই মধ্যে চলতি মাসে ১ বিলিয়নের বেশি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধ করা হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক রোববার বন্ধ থাকায় হিসাব সমন্বয়ক দেশের রিজার্ভ থেকে এ হিসাব সমন্বয় হয়নি। তবে হিসাব সমন্বয় হলে অর্থাৎ আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

বিপি/আজাদ