পরিবেশ দূষণে রাজধানী ঢাকা নিয়মিত বিশ্বের সেরা পাঁচে অবস্থান করে। এর পেছনে বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অপচনশীল প্লাস্টিক ব্যবহার। একাধিকবার প্লাস্টিক-পলিথিন পণ্যে নানান নিয়মকানুন আনা হলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আবার রপ্তানি আয়ে প্লাস্টিক পণ্য বড় ভূমিকা পালন করছে। তাতে দেশের অর্থনীতির সুবিধার্থে উৎপাদন বন্ধ করারও সুযোগ নেই। ফলে প্লাস্টিক দূষণ রোধে সার্কুলার ইকোনমি পদ্ধতি চালু এবং উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্ব (ইপিআর) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পরিবেশ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’ স্লোগানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস, ২০২৩ উপলক্ষে ‘অ্যাডপ্টিং সার্কুলার ইকোনমি ফর সাসটেইনেবল প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত মাল্টিসেক্টরাল অ্যাকশন প্ল্যানে চারটি টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ৯০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য টার্গেটসমূহ পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া, প্লাস্টিক দূষণ রোধে বিজনেস মডেল প্রণয়ন করার চেষ্টা চলমান আছে। এর পাশাপাশি ভোক্তাদের আচরণগত পরিবর্তন বিষয়ে একটি পৃথক স্টাডি করা হচ্ছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্ত্রী বলেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ এর আওতায় গঠিত জাতীয় কমিটি প্লাস্টিক দূষণ রোধসহ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মপরিকল্পনা ও বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতা তথা পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের জন্য স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রতি বছর প্রশংসনীয় বা অনুকরণীয় কাজের স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে কঠিন বর্জ্যসহ প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। এ ছাড়া স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট শক্তিশালী এবং এ সংক্রান্ত আইন, বিধির প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে। প্লাস্টিক দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগ অপরিহার্য। তাই, সবার সহযোগিতা নিয়ে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিটিভ ডক্টর জাকিউজজামান এবং ইউনিডোর রিজিওনাল প্রধান ডক্টর রেনে ভেন বারকেল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ এর চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ এবং জিআইজেড ইন্ডিয়ার ওয়েস্ট কনসালটেন্ট কার্তিক কাপুর।

সেমিনারে সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, প্লাস্টিক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।