বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ফেনীর মহিপালে নয়জন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের , সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল , স্থানীয় সাবেক সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী ও অব.লে জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী সহ ১৬২ জনের নামে মামলা হয়েছে।
আজ বুধবার নিহত শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুমের (২৫) ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বাদী ফেনী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ফেনী মডেল থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাতে গত গত (৪ আগস্ট) ওই হত্যাযজ্ঞে নিহত শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুমের (২৫)’র ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ নিয়ে ওই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় পৃথক সাতটি মামলায় আ’ লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ২ হাজার ৫শত ৮৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় তৎকালীন সরকার দলীয়দের গুলিতে নিহত মাসুম জেলার সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া এলাকার নোমান হাসানের ছেলে। সে ছাগলনাইয়া আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফলপ্রার্থী ছিলেন।
এ মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন-ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল,ফেনী পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করতে প্ররোচনা, উসকানি ও নির্দেশনার অভিযোগে তাদের আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা ওসি (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক সাতটি মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, পরশুরাম উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, সোনাগাজী উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মোস্তফা, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু, জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ।
এর আগে দায়েরকৃত ৬টি মামলায় জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক জনপ্রতিনিধিসহ আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামিকে করা হয়।
গত ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা।
একইসময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরের দিকে ছাত্র- জনতা মহাসকে যোহরের নামাজ আদায় করেছে এমন খবর পেয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আ’লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এ হত্যাযজ্ঞ চালায়।এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানকার এ শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় দূবৃত্তরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।
এম পি