গেল তিন সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরীর খুচরা বাজারে কেজিতে প্রায় ৩২ শতাংশ কমেছে পেঁয়াজের দাম। কমেছে আদা-রসুনের দামও। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম।

গত ২৮ নভেম্বর ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে পণ্যটির দাম কমেছে ৩৫ টাকা বা ৩১ দশমিক ৮১ শতাংশ। একই সময়ে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে কেজিতে ২৫ টাকা বা ২৮ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গেল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পর ভারত ও পাকিস্তান থেকে ব্যাপকভাবে পণ্যটির আমদানি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এতে সরবরাহ বাড়ে দেশীয় বাজারে। তাছাড়া শীতের সবজি হিসেবে বাজারে এসেছে পেঁয়াজ পাতাও। অনেকেই পেঁয়াজের পরিবর্তে ব্যবহার করেন এই পাতা। সব মিলিয়ে কমতে থাকে দাম।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পেঁয়াজ ছাড়াও পাইকারিতে দাম কমেছে আদা-রসুনের। এরমধ্যে একই সময়ে প্রতিকেজি ভারতীয় আদার দাম ২০-৩০ টাকা এবং ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে রসুনের দাম। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাইকারিতে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া আদা এখন ৯০ টাকা এবং ২শ টাকায় বিক্রি হওয়া রসুন এখন ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমার বিষয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার-সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, এখন ব্যাপক আমদানি হচ্ছে, তাই সরবরাহও বেড়েছে। আবার বাজারে পেঁয়াজ পাতাও এসেছে। তাতে পেঁয়াজের চাহিদা কিছুটা কমেছে। আদা-রসুনের দামও কমেছে। তাছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামও কমতির দিকে।

এদিকে অধিকাংশ সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে ফুলকপির দাম। নগরীতে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সবজিটি। অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ১শ, বরবটি ৬০, শিম ৮০, শসা ৫০-৬০, বেগুন ৫০, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০, দেশি আলু ৮০, পেঁয়াজ পাতা ৬০, মুলা ৩০, বাঁধাকপি ৩৫, কাঁচা মরিচ ৬০, গাজর ৮০, লেটুস পাতা ২৫০ এবং পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮৫, সোনালি ২৮০-৩শ, লেয়ার ৩৯০ এবং দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম প্রতিডজনে ৫ টাকা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। পাইকারি দোকানে ১৩০ থেকে ১৩৫।

অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। হাড়সহ ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। মাছের মধ্যে পোয়া ২৮০, লইট্টা ২শ, পাবদা ৩৮০-৪২০, রূপচাঁদা ৫৫০-৬৫০, তাইল্লে মাছ আকার ভেদে ৫শ-৭শ, তেলাপিয়া ২শ-২২০, পাঙাস ১৭০-১৮০, রুই ৩৫০-৩৮০, কাতল ৩৫০, বেলে ২৮০-৪শ এবং মৃগেল ৩শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর জানান, শীত আসতেই মাছের বিক্রি কমে গেছে। দেশি তাজা মাছ কিছু বিক্রি হচ্ছে। তাও অল্প করে নিচ্ছে মানুষ।

তবে সামুদ্রিক মাছ বিক্রেতা আলা উদ্দিন বলেন, ‘বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে। আজকে একটা বড় কোরাল বিক্রি করলাম। লাক্ষ্যা বিক্রি হচ্ছে। নদীর পাঙ্গাস বিক্রি করছি। এসব মাছ তো সবাই কিনে না। এগুলোর আলাদা কাস্টমার আছে।’

বর্তমানে প্রতিকেজি মশুর ডাল (মোটা) ১শ-১১০ এবং মশুর (দেশি) ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মশুর ডাল (ক্যাঙ্গারু) বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। মুগ ডাল (দেশি) ১৪০-১৬৫ এবং ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। খোলা চিনি ১২০ থেকে ১২৭ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি প্যাকেট চিনি ১২৫। লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০।

চালের দাম খোলা বাজারে, কাটারি ৭৬, জিরাশাইল ৭৩, নাজিরশাইল ৮০, মিনিকেট আতপ ৬৮, মিনিকেট সেদ্ধ ৬১, স্বর্ণা ৫৬ ও গুটি স্বর্ণা ৪৯। ৫০ কেজির বস্তা কিনলে কাটারি ৩ হাজার ৮শ, জিরাশাইল ৩৬৫০, নাজিরশাইল ৪ হাজার, মিনিকেট আতপ ৩ হাজার ৪শ, মিনিকেট সিদ্ধ ৩ হাজার ৫০, স্বর্ণা ২ হাজার ৮শ ও গুটি স্বর্ণা ২৪৫০ টাকা।

এনজে