চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী দেশটির তিব্বতের প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। ইউএসজিএস জানায়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১। ভূমিকম্পের আঘাতে অনেক ভবন ধসে পড়েছে বলেও জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রতিবেশী নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতেও এই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
চায়না ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার (সিইএনসি) অনুসারে, সকাল ৯টা ৫ মিনিটে নেপালের সীমান্তের কাছে ডিংরি কাউন্টিতে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১ বলে জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সিসিটিভি জানিয়েছে, ‘ডিংরি কাউন্টি এবং এর আশেপাশের এলাকায় খুব শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে এবং ভূমিকেন্দ্রের কাছাকাছি অনেক ভবন ধসে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত নয় জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরে সকাল ১০ টা পর্যন্ত একাধিক আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে। আফটারশকগুলোর সবচেয়ে বড় মাত্রা ছিল ৪.৪।’
সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ‘ভূমিকম্পের প্রভাব মূল্যায়ন করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কাউন্টির বিভিন্ন শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’ তিব্বত অঞ্চলের পহাড়ী এলাকায় প্রায় ৬২ হাজার মানুষের আবাসস্থল এবং মাউন্ট এভারেস্টের চীনা পাশে অবস্থিত।
যদিও এই অঞ্চলে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা, মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটি গত পাঁচ বছরে ২০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল বলে সিইএনসি জানিয়েছে। কাঠমান্ডুর পাশাপাশি এভারেস্টের নিকটবর্তী উচ্চ পর্বতমালায় নেপালের লোবুচের আশেপাশের অঞ্চলগুলোও কম্পন এবং আফটারশকে কেঁপে উঠেছিল।
নেপালের নামচে অঞ্চলের সরকারি কর্মকর্তা জগৎ প্রসাদ ভুসাল বলেছেন, ‘এখানে বেশ প্রবলভাবে কেঁপে উঠেছে, সবাই জেগে আছে, কিন্তু আমরা এখনও কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানি না।’ অঞ্চলটি এভারেস্টের কাছাকাছি অবস্থিত। এটি নেপাল একটি প্রধান ভূতাত্ত্বিক ফল্টলাইনে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে ধাক্কা খেয়ে হিমালয় তৈরি করে এবং ভূমিকম্প একটি নিয়মিত ঘটনা।
২০১৫ সালে নেপালে ৭.৮-মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ২২ হাজারের বেশি আহত হয়েছিল। এ ছাড়া অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছিল।
সূত্র : এএফপি