গাইবান্ধায় অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ পুনরায় দাদন ব্যবসায়ী অপহরণকারীর হাতে তুলে দেয়া হয়। তারপর দাদন ব্যবসায়ীর বাড়িতে ব্যবসায়ীর রহশ্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মজিবর রহমান ও এসআই মোশাররফকে দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমানকে কারন দর্শাও নোটিশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। বিষয়টি জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম

গত ৫ মার্চ জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর স¤পাদক কুখ্যাত দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা। এরপর তাকে উদ্ধারের দাবিতে হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম থানায় অভিযোগ করেন । অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই দাদন সন্ত্রাসী মাসুদ রানার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে । তারপর রহশ্যজনক কারনে অপহৃত ব্যবসায়ী হাসান আলীকে আবারও অপহরণকারী দাদন সন্ত্রাসী মাসুদের জিম্মায় দেয় ছেড়ে দেয় পুলিশ।

প্রায় একমাস ওই দাদন সন্ত্রাসী মাসুদের বাড়িতে আটক অবস্থায় থাকার পর গত ১০ এপ্রিল শনিবার মাসুদের বাড়ির টয়লেট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদে বার্তায় হাসান আলী স্বজনদের জানান, মাসুদ রানা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে মিথ্যা অঙ্গীকার নেয়। এই ক্ষুদে বার্তা পেয়ে ওই দিনই দাদন সন্ত্রাসী মাসুদ রানাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ১১ এপ্রিল রোববার আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে মাসুদ রানাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা এবং পাদুকা ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানা পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় মাসুদ রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে চারদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।

ঘটনার পরপরই হাসান আলী হত্যার বিচার দাবীতে ফুঁসে ওঠে গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে গঠন করা হয় হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চ।

এ অবস্থায় ১১ এপ্রিল পুলিশ সুপার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন । তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রাপ্তির পর অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা ওসি তদন্ত মজিবর রহমান ও এসআই মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। এবং ওসি মাহফুজুর রহমানকে কারন দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়।

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহাত গাওহারীকে আহবায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়াটার্স) আবুল খায়ের ও পুলিশ পরিদর্শক (ডিআই-ওয়ান) আব্দুল লতিফকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি তদন্ত শেষে ২০ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।