Top
সর্বশেষ

করোনায় কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি আফাজের মৃত্যু

১৮ জুলাই, ২০২১ ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
করোনায় কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি আফাজের মৃত্যু

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোরবার (১৮ জুলাই) রাত ১ টা ৪০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। আফাজ উদ্দিন আহমেদের ছোট ছেলে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন ঢাকা থেকে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদ ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। গত ২৩ জুন তাঁদের দুজনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য আলাদা দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়। ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে। সেখানে দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা গ্রহণের একপর্যায়ে মনোয়ারা বেগমকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চারদিন লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গত ৮ জুলাই সকালে করোনা আক্রান্ত মনোরায়া বেগম মৃত্যুবরণ করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর সময় ওই হাসপাতালে তিনিও চিকিৎসাধীন ছিলেন। সে সময় তাঁর শারীরিক অবস্থাও মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।

গত পাঁচদিন আগে বিএসএমএমইউ থেকে তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়ার পর ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা। টানা ২৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে পরাস্থ হন আফাজ উদ্দিন। লড়াইয়ের পর হেরে যান তিনি। রোববার রাত ১টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এই সংসদ সদস্য।

এর আগে শনিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় আফাজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে উপজেলাব্যাপী ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। সোস্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলা পরিষদের সরকারি মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদের মাইকে তাঁর মৃত্যুও খবর ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে জেলা জুড়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এদিকে রোববার (১৮ জুলাই) ভোর রাতেই বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রোববার বাদ আছর উপজেলঅর তারাগুনিয়াস্থ তাঁর গ্রামের বাড়িতে দাফন হতে পাওে বলে তাঁর ছোট ছেলে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুন জানিয়েছেন।

দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আফাজ উদ্দিন আহমেদের রয়েছে বর্ণাঢ্য ইতিহাস। এখানকার আওয়ামী লীগের সাথে আফাজ উদ্দিনের নাম জড়িয়ে আছে। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর একাধারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে না ওঠায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এখানকার আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। অত্যন্ত মিষ্টভাষী ও সদালাপী এই নেতা তাঁর পরিচ্ছন্ন ইমেজের কারণেই নিজ দলের বাইরেও সবার কাছে ছিলেন একজন গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আফাজ উদ্দিন আহমেদ এরশাদ সরকারের আমলে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসন থেকে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি নিঃস্বার্থভাবে দল ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে এসেছেন।

শেয়ার