নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী বলেছেন, বড় ভাইয়ের স্থানটি আমি ওবায়দুল কাদের ভাইকে দিয়েছিলাম। কিন্তু উনি উনার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। অথচ আপনি (মির্জা) গত ১০-১৫টি বছর আমার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন বুকে হাত দিয়ে বলেন। আপনি আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সময় কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন, আজ আপনি সব ভুলে গেছেন। আপনার পায়ে ধরে এখন সবাই সালাম করে, আপনি সাধু-বাবা সেজেছেন। জীবন একটা, আজ হোক-কাল হোক সবাইকে মরতে হবে , কিন্তু আপনি যেগুলো করে যাচ্ছেন সারা জীবন কোম্পানীগঞ্জের লোকজন আপনাকে ঘৃণার চোখে দেখবেন।

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে এমপি বলেন, কাদের ভাই নোয়াখালী আওয়ামী লীগকে বাঁচান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বাঁচান। আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি করে যাচ্ছেন। যে ক্ষতি আওয়ামী লীগ পুষিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হবে। আপনি কেন বুঝেন না, নেত্রী বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনাকে চুপ থাকার জন্য বলছে। এগুলো কেন বুঝেননা আপনার এক্ট্রিভিটিজ কেউ পচন্দ করছেনা, নোয়াখালীর মানুষতো না। নোয়াখালীর কয়েকজন সুবিধাবাদী লোক ছাড়া নোয়াখালীর ম্যাক্সিমাম (বেশির ভাগ) মানুষের কাছে আপনি ঘৃণিত লোক।

তিনি বলেন, আপনি কথায় কথায় বলেন আমার ছেলের হাতে অস্ত্র, আমি ২৬টি খুন করেছি, একটা খুনের প্রমান দিতে পারবেন! আপনার পরিবার কি? আপনি নিজেও বলেন, আপনার ভাগনেরা বলে আপনার রাজাকার ফ্যামেলি (পরিবার)। এ কথা আমি বলার কারণে আপনার বড় ভাই (ওবায়দুল কাদের) আমাকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দিয়ে দিছে। কিন্তু আপনারা কি ইতিহাস কি পরিবর্তন করতে পারবেন?। আপনার বাবা তিনটা লোককে বিদ্যালয়ে যে হত্যা করলো, পাঞ্জাবিদের হাতে ধরা পড়ার পর ওই তিনজনকে তার বিদ্যালয়ের না বলাতে হত্যা করা হলো। অথচ ওই তিনজন মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণে যাচ্ছিল। আপনি নিজেওতো বললেন আমার বাবা আমার চাচা ওরা রাজাকার ছিলেন, হিন্দুদের বড় বড় গরু নিয়ে আসছিল। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলো অথচ তারপরও আমরা এ ধরনের কিছু করিনি।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভ ভিডিওটি সরিয়ে নেন। এর আগে ১৮মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে আজকে (বৃহস্পতিবার) নিজের হার্টে অপারেশন হবে বলে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমার দুঃখ লাগে বাংলাদেশ সমন্ধে। আমরা কোন দেশে আছি। যে ভাবে আপনার ভাই এসপিকে বলে কুলাঙ্গার এসপি,ওসি বলা কুলাঙ্গার ওসি,ইউএনওকে বলা হয় কুলাঙ্গার ইউএনও। উনি কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী ঊনি প্রশাসনকে যে এভাবে কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কন্টোল করতে না পারলে একটা দিন আমাকে দেন। আপনার ভাইকে ওই পিচঢালা রাস্তার ওপর দিয়ে চেঁচায়ে চেঁচায়ে আনবো। আপনার কারণে আমাদের অনেকের মুখ বন্ধ। আমার মুখ বন্ধ বিশেষ করে জননেত্রী শেখ হাসিনা ৪-৫ বার খবর পাঠিয়েছেন নানক ভাইয়ের মাধ্যমে। আমি যেন কোন কথা না বলি। আজকে কথা গুলে বলতেছি যেহেতু হার্ট অপারেশন। বাঁচতেও পারি, মরেও যেতে পারি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির উদ্দেশ করে বলেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম একটা জালিমের থেকেও খারাপ। চল্লিশ বছর সে চরবাটাকে শাসন করেছে। কিন্তু কি দুঃশাসন করেছে সেটা আমি এমপি হওয়ার পর জেনেছি। কাদের সাহেবের বিরুদ্ধে আমি ২০০১সালে ভোট করে ছিলাম। ওই অবস্থান থেকে ২০০৮ সালে আমাকে দলে নেওয়া হলো। ২০০৮ সালে এসে নোয়াখালী-৪ আসন থেকে ভোট করার ব্যবস্থা করে দেন কাদের ভাই। উনি মনে করেছেন ওটাতো বিএনপির ঘাঁটি একরাম জিতবেনা। তখন অনেক বড় বড় নেতা আমাকে ইঙ্গিত আকারে বলেছে তাকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য। অনেক কষ্টে কাদের ভাই ১১শত ভোট নিয়ে জিতলেন। তাও আমার উপজেলা-ইউনিয়নের ভোট নিয়ে।