Top

মাগুরায় মাল্টা চাষে আশিকুরের সাফল্য

০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৮:১৫ অপরাহ্ণ
মাগুরা প্রতিনিধি :

মাগুরা জেলার জগদল ইউনিয়নের রূপাটি গ্রামে ২ একর জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন তরুণ উদ্যোক্তা চাষী আশিকুর রহমান মুন্না। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ রঙের মাল্টা। প্রতিটি গাছে ২০-২৫ টি করে মাল্টা ধরেছে। বাজারে মাল্টা সাধারণত হলুদ রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু বারি-১ জাতের এ সবুজ রঙের মাল্টার পুষ্টিগুণ অনেক বেশী ।
আশিকুর রহমান মুন্না বলেন, আমি একজন কম্পিউটার সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। ভালো চাকুরি পাচ্ছি না। তাই নিজেদের পতিত জমিতে আগ্রহ প্রকাশ করি মাল্টা চাষের। ২০১৬ সালে যশোরের ঝুমঝুমপুর নার্সারি থেকে ৩৫০টি চারা গাছ সংগ্রহ করে ৭৫ শতক নিজ জমিতে প্রথম চাষ শুরু করি। প্রথম বছরেই পাই সাফল্য। তারপর সাফল্যের পথ ধরে ২০১৭ সালে ৯৫ শতকে শুরু করি আরেকটি মাল্টা বাগান। ২০২০ সালের ২টি বাগানে মাল্টা চাষে আমার খরচ হয় ২-৩ লাখ টাকা। মাল্টা বিক্রি করি সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এবার চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। অতিবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহে মাল্টা বাগানে ফুল অনেকাংশে ঝরে পড়ে গেছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে যখন গাছে ফুল আসে তখন আবহাওয়া ভালো ছিল না। গাছের ফুল যখন ঝরে পড়ছিল তখন আমি গাছের পরিচর্চা বাড়াই। সার ও সেচ নিয়মিত দেওয়ার ফলে গাছ ধীরে ধীরে বড় হয়। এরপর গাছের গোড়া থেকে আগাছা পরিস্কার করি। মে-জুন থেকে গাছে ফল আসতে শুরু করে। এ ফল পরিপূর্ণ হয় সেপ্টেম্বর মাসে। এবার ফলন কম হওয়ায় বিক্রি কম হবে। আমার ২ বাগানে এবার ৭০-৮০ মণ মাল্টা হবে বলে আশা রাখছি । যা বিক্রি হবে ২-৩ লাখ টাকা । এ মাল্টা রঙ সবুজ হলের ভেতরে সাদা, রসে পরিপূর্ণ ও মিষ্টি । ঢাকার ব্যাপারিরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে বাগান থেকে মাল্টা নিয়ে যায়। তাছাড়া টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া ও রাজশাহীতে মাল্টা যাচ্ছে ।
তিনি আরো জানান, ফলের চাহিদা ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাজারে অনেক ফল ব্যবসায়ী বাগানে এসে মাল্টা ক্রয় করে নিয়ে যায়। এ চাষের জন্য নিয়মিত কৃষি বিভাগের সাথে যোগোযোগ রক্ষা করেন। নিয়মিত সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে গাছে ভালো ফল পাওয়া যায়। মার্চ মাসে যখন গাছে ফল আসে তখন পরিচর্যা বাড়াতে হবে। কাঠের গুঁড়ো, গোবর সার, ইউরিয়া, টিএসপি সার ও নিয়মিত দিতে হবে। যখন ফল আসতে শুরু করে তখন বাগানে পরিচর্যা বেশি বেশি করতে হবে।
তিনি বলেন, পূর্বে এ চাষে আমি মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের সাবেক উদ্যান তত্ত্ববিদ মো: মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। তারা নানাভাবে চাষের কলাকৌশল সর্ম্পকে সহযোগিতা করেছে। আমার বাগান দেখে এখন এলাকার অনেক যুবক মাল্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে । আগামীতে এ চাষে আরো ভালো সাফল্য পেতে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। এ চাষের পাশাপাশি আমি এলাকায় মাছের চাষের জন্য কাজ করব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, মাগুরা জেলায় চলতি বছরে ১০ হেক্টর জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ হয়েছে। মাল্টা একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি।
কৃষি বিভাগ থেকে মাল্টা চাষে চাষীদের উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। জেলার মাটি মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। তাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাল্টা চাষ করলে দেশের অর্থনীতি হবে সমৃদ্ধ।

শেয়ার