Top

কমলনগরে বিজয়ী প্রার্থীর ফলাফল বাতিল ছেয়ে আদালতে মামলা

২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ৫:০১ অপরাহ্ণ
কমলনগরে বিজয়ী প্রার্থীর ফলাফল বাতিল ছেয়ে আদালতে মামলা
আলমগীর হোসেন, লক্ষ্মীপুর :

নির্বাচনের পরের দিন বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন পরাজিত প্রার্থী। নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে ফুল এবং মিষ্টিমুখও করেছেন। কিন্তু নির্বাচনের প্রায় দুই মাস পর ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ছেয়ে মামলা দায়ের করেন সেই পরাজিত প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন রাজন। আদালতে বিজয়ী প্রার্থীর গেজেট বাতিল ছেয়ে তাকে চেয়ারম্যান ঘোষণার আবেদন জানিয়েছেন মামলার এজাহারে। ঘটনাটি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে ঘটেছে।

জানা গেছে, ১১ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাতপাখা প্রতীকের খালেদ সাইফুল্লাহ। নির্বাচনী ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলো মোটরসাইকেল প্রতীকের আশ্রাফ উদ্দিন রাজন (রাজু)। তিনিই ফলাফল বাতিল চেয়ে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজু।

এতে প্রতিদ্বন্দ্বি ৬ প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়েছে। বিবাদীরা হলেন, বিজয়ী চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ (হাতপাখা), প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হোসেন আহম্মদ হাওলাদার (আনারস), মো. নুরুল ইসলাম (নৌকা), ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা (চশমা), মহি উদ্দিন হাওলাদার (ঘোড়া) ও মো. শরীফ হোসেন (অটোরিকশা)।

নির্বাচনে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তোলেন মামলার বাদী।

চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ মামলার কারণ দর্শানো নোটিশ পেয়েছেন বলে এ প্রতিবেদকে নিশ্চিত করে বলেন, এতদিন পর ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলাটি হাস‍্যকর বলে মন্তব্য করেন।

২৯ নভেম্বর তার নামে গেজেট প্রকাশিত হয়। শপথ গ্রহণ করে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। নির্বাচনের পরের দিন আশ্রাফ উদ্দিন রাজু ফুলেল মালা দিয়ে বরণ করে নেন। এসময় একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান। অথচ ২ জানুয়ারি আশ্রাফ উদ্দিন ভোটের ফলাফল বাতিল চেয়ে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

পরাজিত প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দিন মামলায় দাবি করেন, নির্বাচনে নারী পুরুষ ভোটারগণ উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করেন। ভোটাররা তার মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট দেন। ৮ নম্বর কেন্দ্রে ৮৬৩ ভোট পান। অপর কেন্দ্রগুলোতেও অনুরূপ ভোট পেয়েছেন। ফলাফল বিররণীতে তিনি মোট ৩৭৯৭ ভোট পেয়েছেন বলে দেখানো হয়।

প্রকৃতপক্ষে তার এজেন্টদের দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি আরও অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু মামলায় ১ম বিবাদী হাতপাখা প্রতীকের খালেদ সাইফুল্লাহর প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয় ৪৭৬৮টি। যা প্রকৃত অবস্থার বিপরীত। ওপরের মহলের নির্দেশে প্রিজাইডিং অফিসারগণ মোটরসাইকেলের প্রাপ্ত ভোটের ব্যালট উল্লেখযোগ্য অংশ হাতপাখার বান্ডিলের সাথে যুক্ত করে তার প্রাপ্ত ভোট কম দেখিয়ে বেআইনি ভাবে তাকে পরাজিত ঘোষণা করে হাতপাখার প্রার্থীকে বিজয়ী দেখান।

সঠিকভাবে ভোট গননা করলে তিনি নির্বাচিত হতেন। তাই হাতপাখার নির্বাচন বাতিল করে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন মর্মে ঘোষণা ও ডিগ্রিদানের জন্য প্রার্থনায় ট্রাইব্যুনালে নালিশ করেছেন।

রাজু সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২০১১-১৬ সাল পর্যন্ত তিনি চরকাদিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মকাণ্ডে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জায়েদুল হোসেন চৌধুরী বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এরপরও মামলার বিষয়টির খোঁজ খবর নিচ্ছি।

 

শেয়ার