ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার তেলসহ অন্যান্য জ্বালানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। এদিকে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার কথা জানিয়েছে মিত্র যুক্তরাজ্যও। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপে লাফিয়ে বাড়তে পারে তেলের দাম। যার প্রভাব পড়বে মানুষের জীবন যাত্রায়।

রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, রাশিয়ার তেলবাহী জাহাজ আর যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রাশিয়া হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ। দৈনিক ৭০ লাখ ব্যারেল বা বৈশ্বিক সাত শতাংশ তেল সরবরাহ করে দেশটি।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র গড়ে প্রতিদিন দুই লাখ নয় হাজার ব্যারেল ক্রুয়েড ও পাঁচ লাখ অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য রাশিয়া থেকে আমদানি করে। যা অপরিশোধিত তেল আমদানির ৩ শতাংশ ও মার্কিন শোধনাগার দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত মোট তেলের ১ শতাংশ। ফলে বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রাশিয়ার তেল নিষিদ্ধ করায় যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বা তারা এটা পুষিয়ে নিতে পারবে।

মেয়ার রিসোর্সেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেলিয়া মেয়ার বলেন, বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পুষিয়ে নেওয়া সহজ হলেও ইউরোপের জন্য এটা অনেক বেশি কঠিন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে যদি ইউরোপও একই সিদ্ধান্ত নেয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও চীন রাশিয়া থেকে তেল কিনতে পারে।

নিষিদ্ধের ঘোষণায় তেলের দাম লাফিয়ে বেড়ে যেতে পারে। এরই মধ্যে গত মাসে তেলের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এক ব্যারেল তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩০ ডলারে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এক গ্যালন নিয়মিত গ্যাসের দাম হয়েছে চার দশমিক ১৭ ডলার।

জ্বালানি বিশ্লেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, যদি গ্রাহকরা রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ রাখে তাহলে এক ব্যারেল তেলের দাম ১৬০ ডলার থেকে ২০০ ডলার হতে পারে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসের দাম গ্যালন প্রতি পাঁচ ডলার হতে পারে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মূল্যস্ফীতিতে। অর্থাৎ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। দেশটিতে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ভোক্তা মূল্যসূচক সাত দশমিক নয় শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা আমেরিকার জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।