নিজ দেশ পেরিয়ে  প্রবাসেও আমের নতুন রাজ্য বলে খ্যাতি লাভ করেছে নওগাঁর সাপাহার । কিন্তু উপজেলায় ফল-সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্যাকেজিং হাউস না থাকায় বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি শিকার হচ্ছেন কৃষক, ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকেরা। ফলে আম প্যাকেজিং হাউস স্থাপনের দাবি  তুলেছেন আমচাষীসহ এর সাথে জড়িত সকলে। 

উপজেলার জসই ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা খুব কষ্ট করে আম চাষ করি। কিন্তু এখানে আম প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অর্ধেক আমের দাম পায়না। প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা থাকলে যে পরিমাণ আম বিদেশ যায় তার চেয়ে আরো বেশি পরিমাণ বিদেশ পাঠানো সম্ভব।  সুযোগে বিভিন্ন স্তরে আমের সিন্ডিকেটের কারণে কোটি কোটি টাকা ক্ষতির শিকার হই।

ব্যবসায়ী ও আমচাষি এনামুল হক বলেন, আম বিদেশ পাঠানোর জন্য ফল-সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও আম প্যাকেজিং হাউস না করলে এলাকার মানুষ বিপুল পরিমাণ টাকা ঠকে যাচ্ছেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

রফতানিকারক আকবর হোসেন বলেন, ‘ইউরোপের দেশগুলোতে আম বা সবজি পাঠাতে গেলে মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষায় পাস করতে হয়। তা না হলে রফতানিকারকের পণ্য অনুমোদন দেয়া হয় না। মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষায় ফেল করা পণ্য পোড়াতে ১ হাজার ৫০০ ইউএস ডলার ক্ষতিগুনতে হয়। একই সঙ্গে পণ্য ও কার্গো ভাড়া  গুনতে হয়। দেশের মান ক্ষুন্ন হয়। কৃষি দফতরের মান ক্ষুন্ন হয়। যা প্রভাব প্রায় ৫ বছর পোহাতে হয়। এতে কৃষক, ব্যবসায়ী  ও রফতানিকারককে বিপুল পরিমাণ টাকা ক্ষতিতে পড়তে হয়।

সাপাহার উপজেলার আম ইউরোপের দেশগুলোতে চরমখ্যাতি লাভ করেছে এই বাজার ধরে রাখতে হলে, এখানে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও আম প্যাকেজিং হাউস স্থাপন খুব প্রয়োজন। এটি হলে বিভিন্ন প্রকার ফল ও সবজি বিদেশে পাঠানো সহজ হবে। নতুন রফতারিকারকেরা নোংরা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব হারিয়ে পথে বসা থেকে রক্ষা পাবে।

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাৎ শাপলা খাতুন বলেন, সাপাহার একটি বড় আমবাজার । এখানে কয়েক উপজেলার আম ক্রয়-বিক্রয় হয়। এই এলাকার আম দেশ ও বিদেশে বেশ সুখ্যাতি লাভ করেছে। বিশেষ করে ইউরোপের বাজারে স্থান করে নিয়েছে। এটি ধরে রাখতে একটি ফল-সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্যাকেজিং হাউস স্থাপন দরকার। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে ১৪ টন ধরে ১২ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আলু, পেয়ারা, বরই/কুলসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন হয় উপজেলা জুড়ে।