চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে খোলা আকাশের নিচেই পাঠদান করেছেন শিক্ষকরা। উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার বহিপাড়া গ্রামের বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ জানান, সোমবার (১৬ মে) মধ্যরাতে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়টির টিনের ছাউনি উড়ে যায়। তবে পাঠদান স্বাভাবিক রাখতে খোলা আকশের নিচেই বসে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা৷
শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, বর্ষার সময়ে যেকোন সময় বৃষ্টি আসতে পারে। এই শঙ্কা মনে নিয়েই তারা ক্লাস করছে। খোলা আকাশের নিচে রোদ মাথায় নিয়েই মঙ্গলবার পাঠদান সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করার দাবি শিক্ষার্থীদের।
বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত আলী জানায়, এভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা খুবই কষ্টকর। রোদের উপরে ক্লাস করতে হচ্ছে। কখন আবার বৃষ্টি চলে আসে সেই ভয় কাজ করছে। এটা তাড়াতাড়ি ঠিক না করলে আমরা ক্লাসই করতে পারব না।
অভিভাবক তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় গড়ে উঠা বিদ্যালয়ে এই এলাকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। কিন্ত ঝড়ে় ঘর ভেঙে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই অস্বচ্ছল বলে অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় মেরামতের টাকাও জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই যারা সমাজে স্বচ্ছল মানুষ রয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে তাদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করিয়েছি। তবে রোদে বাচ্চাদের নিয়ে ক্লাস করতে অনেক সমস্যা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঝড়ে বিদ্যালয়ের ছাউনী উড়ে যাওয়ার পরেই আমরা বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ঝড়ে টিন উড়ে যাওয়া ঘরগুলো মেরামতের দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
গোমস্তাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী খাতুন জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন। খুব শিগগির এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে পারবে।
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা খাতুন বলেন, বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে ফেরাতে ও ভোগান্তি কমাতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কক্ষ মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৫১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন।
বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
