চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের সাথে জড়িত আরেক আসামি সাইফুলকে (২৩) নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ নিয়ে নিপীড়নের ঘটনায় মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

সাইফুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের বাসা। তবে সাইফুল চবি কিংবা অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র নয় বলে জানা গেছে।

র‌্যাব জানায়, সাইফুল ঘটনার নেতৃত্ব দেয়া আজিমের সাথে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এর আগে শনিবার সকালে র‌্যাব-৭ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেছিলেন, চবি ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের মূল অভিযুক্ত মো: আজিমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় ছয়জন সম্পৃক্ত ছিলেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: আজিম (২৩), নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আবছার বাবু (২২), হাটহাজারী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো: নুর হোসেন শাওন (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা মাসুদ (২২)।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, মূল অভিযুক্ত আজিম ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। তার নেতৃত্বই এ ঘটনা ঘটে। তার বাসাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এলাকায়। আজিম ক্যাম্পাস এলাকায় একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তার নেতৃত্বে ছয়জন দু’টি মোটরসাইকেলযোগে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আসামিরা ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে বাকি পাঁচজনের নাম পাওয়া যায়। ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দু’টি ছিল সাইফুল ও শাওনের।

এছাড়া আগে আটক চারজনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মো. আজিম, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ একই বর্ষের নুরুল আবছার বাবুকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সাথে হাটহাজারী সরকারি কলেজ সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রথম বর্ষের ছাত্র নুর হোসেন শাওন ও দ্বিতীয় বর্ষের মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর সুপারিশ করবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব হেলথ এন্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধুর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে হলের দিকে ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। আজিম ও তার গ্রুপ চবি এলাকায় রাতে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় হয়রানির শিকার ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুর দিকে হঠাৎ নজর পড়ে আসামিদের। তারা গিয়ে প্রথমে ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে তারা মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়। তাদের দু’জনকে আটকে রেখে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। মারধরের একপর্যায়ে ছাত্রীটিকে বিবস্ত্র করে ফেলে আসামিরা। এছাড়া শ্লীলতাহানি করে ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে ছেড়ে দেয়।