ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণে জমিজমা সংক্রান্ত মামলা উত্তোলনের খরচের টাকার হিসাব নিয়ে বিরোধের জেরে চাচা ও চাচাতো ভাইদের হামলায় আহত মাওঃ নুরুল ইসলাম (৩৬) নামের মসজিদের ইমাম মারা গেছে। এ সময় আহত হয়েছেন নিহতের স্ত্রী, ভাই ও মা।

শুক্রবার সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কেরাতুল কোরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন জমাদার বাড়ির দরজায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসাঃ মরিয়ম বেগম বাদি হয়ে ৭ জনকে আসামী করে শুক্রবার রাতে শশীভূষণ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় এজাহারভূক্ত আসামী নিহতের চাচা আব্দুল মালেক জমাদার পালানোর সময় চরফ্যাশন বাজারে নিহতের স্বজনেরা ও স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছেন। আটককৃত আব্দুল মালেক জমাদার একই এলাকার মৃত মো. ইয়াছিন আলী জমাদারের ছেলে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

নিহত মাওঃ নুরুল ইসলাম ওই এলাকার আব্দুর রসিদ জমাদারের ছেলে। সে পেশায় একজন ইমাম। তিনি এওয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন কুন্টিমিয়া ডাক্তার বাড়ির জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। তার ১৩ বছরের ১ টি ছেলে ও ১১ বছর, ১০ বছর ও ৯ মাসের ৩ টি মেয়ে সন্তান রয়েছেন। মেয়ে নিলুফা (১১) শশীভূষণ থানায় বসে বাবা মাওঃ নুরুল ইসলামের হত্যার কথা বলে বার বার কেঁদে উঠেন। এবং তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার দাবী করেন।

আহতরা হলেন, মোসা: মরিয়ম বেগম (৩০), মো. ইউসুব (২২) জাহানারা বেগম (৬০) ও সুমাইয়া (৯)। তাদের মধ্যে জাহানারা বেগম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে আসেন। বাকীরা চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতের স্ত্রী ও মামলার এজাহারে সূত্রে জানাযায়, জাল দলিল সংক্রান্ত একটি মামলা উত্তোলনের খরচের টাকার হিসাব নিয়ে চাচা আবু তাহের জমাদার গংদের সঙ্গে ভাতিজা মাওঃ নুরুল ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় চাচা আবু তাহের জমাদার, আব্দুল মালেক জমাদার, সিরাজ জমাদার, বারেক জমাদার ও চাতাতো ভাই তারেকসহ লোকজন নিয়ে মাওঃ নুরুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়। এ সময় চাচা আবু তাহের জমাদারের হাতে থাকা লোহার সাবাল দিয়ে ভাতিজা মাওঃ নুরুল ইসলামের মাথায় আঘাত করে আহত করা হয়। তাকে বাচাতে স্ত্রী মরিয়ম বেগম, ভাই ইউসুব ও মা জাহানারা বেগম এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও হামলা করে আহত করা হয়।

পরে নিহতের ভাই ইউসুব জাতীয় জরুরী সেবা ‘৯৯৯’ ফোন দিলে শশীভূষণ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার কওে স্থানীয়দেও সহায়তায় চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন। মাওঃ নুরুল ইসলামের অবস্থা আশস্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে মারা যান তিনি।

শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, শুক্রবার সকালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ভাতিজা ও চাচা ও চাচাতো ভাইদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের স্ত্রী ৭ জনকে আসামী করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারভূক্ত আসামী আব্দুল মালেক জমাদারকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।