দেশের উত্তরের জেলা দুটি জেলার মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা একটি। হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর এখানে শীতের প্রকোপ বেশি হয়ে থাকে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবার শীতের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেনা।

গত ২সপ্তাহ থেকে জেলায় শুরু হয়েছে প্রচণ্ড কুয়াশা ও হিমেল হাওয়া। দুপুরে কিছুটা সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রা থাকে অনেক কম। বিকেল থেকেই শুরু হয় হিমেল হাওয়া ও কুয়াশা পড়া। রাত বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে পড়তে থাকে কুয়াশার ফোঁট ফোঁটা বিন্দু। আর এমন কনকনে ঠাণ্ডায় কাজ করতে না পারায় চরম বিপাকে ও দূর্ভোগে পড়েছে জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। অপরদিকে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু এবং বয়ষ্ক রোগির সংখ্যা।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

তীব্র কুয়াশার কারণে ভোরে ও বিকেল বিকেলেই জেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল করছে বাতি জ্বালিয়ে ।

তেঁতুলিয়া থেকে পাথর বোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসা ময়নুল ইসলাম জানান, ‘তেঁতুলিয়া থেকে লোড ট্রাকটি নিয়ে ঠাকুরগাঁও এসেছি খুব কষ্ট করে। রাস্তায় এতো কুয়াশা যে হেডলাইটের আলোয় দুই হাত দূরেও ভালো করে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এতে রাস্তায় দূর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা খুব বেড়ে গেছে। আগে আমরা লোড ট্রাকের গতি রাখতাম ৬০-৭০ কি.মি. আর এখন আমরা তা ২০ কি.মি. পার করতে পারিনা ’।

শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। শীতবস্ত্রের দামও বেড়ে গেছে। তবে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, ব্যবসায়ী, দানশীল ব্যক্তি কম্বল, শীতবস্ত্র বিতরণ করছে প্রতিদিন।

শীতের কারণে মাঠ ঘাটে ঠিকভাবে কাজ কর্মও করতে পারছেন না অনেকে। এমন অবস্থায় শ্রমজীবী, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কিছু কিছু মানুষ উপায়ন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে এই শীতে মাঠে ঘাটে কাজ করছেন তারা।

ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদফতর নেই। তবে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তারা জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের তীব্রতা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে। শীতের বর্তমান অবস্থা আরো কয়েকদিন বিরাজ করতে পারে। এ মাসের শেষে কয়েকটি শৈত্য প্রবাহ হতে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতকাল ৪ জানুয়ারি সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে শীত জেঁকে বসায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালে আসছে শিশু এবং বয়স্ক রোগীরা। বর্তমানে অনেক শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে ঠাণ্ডাজনিত রোগে গড়ে প্রায় ৩০০ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। যা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।