কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার গড়ে উঠছে পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক রিসাইকেলিং কারখানা। এসব কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করা শ্রমিকরা রয়েছেন চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে। তাছাড়া এখানকার বিষাক্ত পানিতে নষ্ট হচ্ছে ফসল আর বর্জ্য পোড়ানোর ধোয়া ও অসহ্য দূর্গন্ধে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ।

জেলার পাঁচবিবি উপজেলার নওদা, নাকুড়গাছি, হঠাৎপাড়া ও বিজিবি ক্যাম্প এলাকার লোকালয়ে ও সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেলিং কারখানা। বিভিন্ন জায়গার হকারদের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী ক্রয় করে তা রঙ অনুযায়ী আলাদা করে কাটিং মেশিনের মাধ্যমে ছোট ছোট টুকরায় পরিণত করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করার পর বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে ঢাকায় ।

নওদা গ্রামের ইলিয়াস আলী জানান, এই কারখানার বিষাক্ত পানি নষ্ট করছে আশপাশের ফসল আর এখানকার বর্জ্র পোড়ানোর ধোয়া ও দূর্গন্ধ এলাকায় থাকা কষ্ট হয়ে যায়, সেই সাথে এই পানি যে এলাকায় যায় সেখানে ফসল ভালো হয়না।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পাচবিবি দরগাপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, সুহেল রানা জানান, এই কারখানা নির্মানের ফলে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে কিন্তু এর বিষাক্ত ধোয়ায় এলাকায় মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, সেই সাথে ওর আশে পাশে জমিতে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়।

এই কারখানায় কাজ করা কয়েকজন শ্রমিক জানান, তাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করিয়ে নিয়ে মাত্র ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় এসব কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক। জীবনের ঝুকি নিয়ে সারাদিন কাজ করলেও তারা পাচ্ছেন না শ্রমের নায্য মূল্য।

পাঁচবিবি পৌরসভার কউিন্সিলর আনিসুর রহমান বাচ্চু জানান, এই কারখানাগুলোর ফলে এলাকার পরিবেশ ও ফসল বিনষ্ট হচ্ছে সেই সাথে শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো দেওয়া হয়না। অন্যদিকে স্বাস্থ ঝুকির মধ্যেও থাকতে হয় এসব শ্রমিকদেও ,তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।

মেসার্স মোমেন প্লাষ্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মোমেন জানান, তার পরিবেশের অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেই। এমনকি সেই সম্পর্কে তিনি তেমন না বুঝলেও এই ব্যবস্থা করে নিজের ভাগ্যেও ব্যপক পরিবর্তন করেছেন বলেন জানান তিনি। এসব কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র ও প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র না থাকলেও অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন এসব রিসাইকেলিং কারখানার মালিকরা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন জানান, এসব রিসাইকেলিং কারখানার কোন তথ্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তরে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি। আশ্বাস দিলেন এই কর্মকর্তা।

প্রকৃতি, পরিবেশ ও ফসল রক্ষার পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষ ও নায্য মজুরি নির্ধারনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ এমনই প্রত্যাশা সকলের।