অশান্ত ও অস্থির মন নিয়ে কোনো কাজই হয় না। ডাক্তাররা বলেন, এখনকার রোগীদের বেশির ভাগ রোগই নাকি মনোদৈহিক। এটা ঠিক যে মনের প্রভাব শরীরের ওপর পড়ে। তাই মনের সুখতর দিকে লক্ষ রাখা উচিত সর্বদা।

মন ভালো থাকলে শরীরও চনমনে থাকে। মনের ওপর খারাপ প্রভাব পড়লে স্বাস্থ্যের ওপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। মনের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি হলে মানুষ তার সক্ষমতা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারে না। আমাদের চারপাশের পরিবেশ মনের ওপর প্রভাব ফেলে। প্রযুক্তির এই যুগে, আধুনিকতার স্রোতে মানুষ এখন একদণ্ড সময় পায় না মনকে প্রশান্ত করার। সবার মধ্যেই প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে। যার ফলে মন প্রাকৃতিকভাবে সব সময় চাপের ওপর থাকে।

আপনি চাইলে কিছু সহজ উপায়ে মনকে প্রশান্ত করে তুলতে পারেন। পরামর্শগুলো হলো:

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

-সর্বপ্রথম নিজের মনের অনুভূতি বুঝুন আপনার মন এখন কি করতে চায় সেটি বুঝতে চেষ্টা করুন। মনের অতিষ্ঠ, উদ্বিগ্ন, বিরক্তি, ভয়, দুঃখ, রাগ ভাব বুঝে নিন।

– প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের সময় কেড়ে নিয়েছে। ইন্টারনেটে আসক্তির মানসিক চাপের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। মনকে প্রশান্ত করতে প্রযুক্তিপণ্য কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রেখে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলেই মন সতেজ হয়ে উঠবে। কিছু সময়ে জন্য আপনার ফোনটি বন্ধ রেখে কাছের কোনো পার্কে কিছুক্ষণ হেঁটে এলেই পার্থক্য টের পাবেন।

– নিজেকে রিচার্জ করতে পারেন ছুটি কাটিয়ে। সপ্তাহান্তের ছুটিতে কোথাও ঘুরে আসুন। জীবনে যখন নিত্যদিনের নানা চ্যালেঞ্জ আপনার ওপর বোঝা বাড়াচ্ছে, তখন একটা মুক্তির পথ বের করুন। সবকিছু ছেড়ে এক-দুই দিনের জন্য বেড়িয়ে আসুন। কাজে-কর্মে নতুন করে শক্তি পাবেন।

– যোগব্যায়াম করে আপনার মনকে প্রশান্ত করে তুলতে পারেন। যোগব্যায়াম করলে মানসিক শক্তি বাড়ে এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য মন প্রস্তুত হয়। মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত কিছু সময়ের জন্য ধ্যান করতে পারেন।

– প্রত্যেকের নিশ্চয়ই প্রিয় কিছু খেলা বা অন্যান্য কার্যক্রম আছে? জীবনে যখন অনেক বেশি চাপ চলে আসে এবং মনের কোনো বিশ্রাম পাওয়া যায় না, তখন মনকে প্রশান্ত করে তুলতে আপনার প্রিয় খেলা বা প্রিয় শখের কাজগুলো করতে পারেন। এতে মন কিছুটা ঘুরে যাবে এবং মানসিক শান্তি পাবেন। মানসিক চাপের মধ্যে আপনার প্রিয় কাজগুলো একবার করে দেখুন আপনার চাপ কমে যাবে।

– চারপাশের পরিবেশ মনের ওপর প্রভাব ফেলে। মনকে প্রশান্ত করে তুলতে চারপাশে ইতিবাচক ও শান্ত পরিবেশ দরকার। যখন আপনার চারপাশ অগোছালো দেখবেন, তখন একধরনের চাপ চলে আসবে। গোছালো থাকুন; এতে আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাবেন।

– মানসিক প্রশান্তির জন্য গান হতে পারে চমৎকার ওষুধ। আবেগের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে গান। গোসলের সময় বা কাজে যাওয়ার পথে বা হাঁটার পথে প্রিয় কিছু গান শুনুন। মন প্রশান্ত হবে।

– আপনার পোষা প্রাণীটির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান। মন শান্ত হবে।

-গভীর শ্বাস পুরোনো পদ্ধতি হলেও বেশ কার্যকর। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে গুনতে শ্বাস ছেড়ে দিন। মন শান্ত করতে এই পদ্ধতি দ্রুত কাজ করে।

-আপনার মন যে কারণে অশান্ত সেই কারণগুলো কাগজে লিপিবদ্ধ করুন। তারপর কাগজটি ছিঁড়ে ফেলুন। এতে করে মনের ক্ষোভ দূর হবে, মন শান্ত হবে।

-এমনভাবে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে কিছু করুন যেটা আপনার মনকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেবে। বসে বসে ছবি আঁকতে পারেন। বই পড়ে শেষ করতে পারেন। এমন কিছু করুন যা করলে আপনার নিজের কাছে ভালো লাগবে।

– অন্যের দুঃখে দুখিত হোন, সমবেদনা জানান। নিজের দিক থেকে মনকে সরিয়ে নিয়ে অন্যের দিকে মনোযোগ দিন।