শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঁকাকুড়ার ঢাকাইয়া মোড় থেকে হাতির মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।এসময় হত্যায় ব্যবহৃত জিআই তার উদ্ধার করা হয়েছে ।

শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া নুহু মিয়ার ধান ক্ষেতে হাতিটির মৃত্যু হয়।

শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল আলম ভূইয়া ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

স্থানীয়রা জানান, ধান পাকার মৌসুম এলেই তাণ্ডব শুরু হয় সীমান্তজুড়ে। কিছুদিন যাবৎ বন্য হাতির দল শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান নিয়েছে। ফসল রক্ষা করতে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে এরইমধ্যে গত দেড় মাসের ব্যবধানে সীমান্তে চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার মধ্যরাতে বন্যহাতির একটি দল খাদ্যের সন্ধানে বাঁকাকুড়ার ঢাকাইয়া মোড় এলাকার লোকালয়ে কৃষকের ধান ক্ষেতে হানা দেয়। এসময় আগে থেকেই পাগলারমুখ এলাকার কৃষক নুহু মিয়া তার ক্ষেতে জিআই তারে বিদ্যুতের ফাঁদ তৈরি করে রাখেন। ওই ফাঁদে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, গারো পাহাড়ে পর্যাপ্ত হাতির প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় তারা পাহাড় ছেড়ে লোকালয় ও ফসলের ক্ষেতে চলে আসছে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জেলায় ২৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছে, যার বেশিরভাগই বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জেলায় হাতির আক্রমণে ২১ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

বন্যহাতির মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলন’ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জোর দাবি জানিয়েছে।

প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে মৃত হাতিটির নমুনা সংগ্রহের পর মাটিচাপা দেয়া হয়। বালিজুরি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, হাতিটি বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।

রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, হাতিটি পুরুষ, বয়স আনুমানিক ৪-৫ বছর। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।