রাজধানীর বাজারগুলোতে আরও এক দফা কমেছে কাঁচামরিচের দাম। এখন বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকাতে। আর হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বেগুনের দামও কমেছে। বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ টাকা কেজিতে।

দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে কাঁচামরিচ ও বেগুনের দাম কমেছে ৩০-৫০ টাকা। তবে নতুন করে দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের। মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা। আর ডিমের হালিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।

মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর থেকে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। আর চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে। কাপ্তান বাজার থেকে বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

শনিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজিতে। আর ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৮ টাকা হালিতে। অথচ দুদিন আগেও মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ মুরগির দাম কেজি বেড়েছে।

একইভাবে দুদিন আগের বাজারে এক ডজন ব্রয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। আজ সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ১০৫ টাকা ডজনে। আর খুচরা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৭-৩৮ টাকা হালিতে। হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালিতে।

কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ঈদের পর ১১৫-১২০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি। বিধিনিষেধের সময় দাম কম ছিল। বিধিনিষেধ শিথিল করার পর দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, বিধিনিষেধের কারণে অফিস, পার্টি এবং বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠান কম ছিল। এখন বাড়ছে। তাই মুরগির চাহিদা বেড়েছে, দাম বেড়েছে।

মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা মনিরুজ্জান বলেন, এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা। খাসির মাংসের দাম আরও বেশি। আমাদের মতো কম আয়ের মানুষের তো আর গরু কিংবা খাসির মাংস খাওয়া সম্ভব না। ব্রয়লার মুরগি খেয়েই মাংসের স্বাদ মেটাই। কিন্তু ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে যাচ্ছে। আমরা খাব কি?

রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী মিঠুন বলেন, ডিমের দাম বাড়তি। তিনি বলেন, গতকালও (শুক্রবার) ডিমের ডজন বিক্রি করেছি ১০০ টাকায়। আজ কেনা পড়ছে ১০০ টাকায়, বিক্রি করছি ১০৫ টাকা হালিতে। খুচরা বিক্রি করছি ৩৬-৩৭ টাকা হালিতে।

বাজারগুলোতে দেখা গেছে, চড়া দামেই টমেটো ও শিম বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। তবে দুই দিন আগেও পাইকারি ১০০ টাকা আর খুচরা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৮০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে আর পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। দুদিন আগেও ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুন ৪০-৫০ টাকা কেজিতে কমে রাজধানীর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা দরে।

করলা ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। বরবটি, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স ও ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। আর লাউ ও ছোট কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা পিস। আর পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে। শসা বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজিতে। আর পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।

শাকের মধ্যে পালংয়ের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ শাক। আর সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে লাল ও কলমি শাক। এ দুই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা করে।

বাড্ডা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী রিমন হাওলাদার বলেন, কাঁচামালের বাজার ঠিক থাকে না। এটা ওঠানামা করে। তিনি বলেন, এখন (সকালে) ঢেঁড়স বিক্রি করছি ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে। সন্ধ্যার দিকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করি।

তিনি বলেন, করলা-কাকরোল বিক্রি করছি ৬০ টাকা কেজিতে। কচুর লতি বিক্রি করছি ৪০ টাকায়। আর ভালো কচুরমুখী বিক্রি করছি ৩০ টাকা কেজিতে। একটু ছোট কচুরমুখী বিক্রি করছি ২০-২৫ টাকা কেজি।

বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। ভারতীয় পেঁয়াজ ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। দেশি রসুন ও আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। দেশি মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে। ভারতীয় ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে।

মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি দরে, সোনালী ২১০ থেকে ২২০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪১০ টাকা দরে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে।

মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। ভালো মানের মোটা চাল ৫২, নাজিরশাইল ৬৬ থেকে ৬৮, বাংলামতি ৭৩ থেকে ৭৫, পাইজাম আতপ ৬৩ থেকে ৬৫, মিনিকেট চিকন ৬৬ থেকে ৬৮, পোলাও চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।