Top
সর্বশেষ

গাজীপুরের সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হলে পরিবহণ বন্ধ

০২ জানুয়ারি, ২০২২ ৪:১৫ অপরাহ্ণ
গাজীপুরের সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হলে পরিবহণ বন্ধ
রাকিবুল হাসান রুবেল, ময়মনসিংহ :

গাজীপুরের সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে স্লথ গতির উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ নিরসন অবিলম্বে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও জিলা মটর মালিক সমিতি। রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও জিলা মটর মালিক সমিতির আয়োজনে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানান ব্যবসায়ী ও পরিবহণ নেতারা।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জিলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্তা। এসময় ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম, জিলা মটর মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমানসহ ব্যবসায়ী ও পরিবহন বিভাগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবহণ ব্যবসায়ীরা হুসিয়ারী দিয়ে বলেন, আগামী ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে ঢাকা-গাজীপুর রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না ঘটালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের (ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল) যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনের সড়ক হওয়ায় ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর যাতায়াতে প্রায় এক ঘন্টা থেকে সোয়া ঘন্টা সময় লাগলেও গাজীপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৪/৫ ঘন্টা সময় চলে ব্যয় হয়। যন্ত্রাংশ, টায়ারসহ নতুন-নতুন গাড়ীর কর্মক্ষমতাও ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে প্রতি নিয়ত। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে মানুষের মহামূল্যবান কর্মঘন্টা।

ব্যবসায়ী ও পরিবহণ নেতারা সাধারণ একটি তেলের হিসাব দিয়ে বোঝান প্রতিদিন কী পরিমান ক্ষতি হচ্ছে পরিবহন ব্যবসায়ীদের। পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণ তাদের একটি নিজস্ব জরীপে উল্ল্যেখ করেন ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে প্রতি মিনিটে ৭টি যাত্রীবাহী গাড়ী বিভিন্ন সড়ক থেকে গাজীপুর হয়ে ঢাকা অভিমুখে চলাচল করে। তাহলে গড়ে ঘন্টায় যাতায়াত করছে ৪শ ২০টি গাড়ী। সেই হিসেবে গড়ে ২৪ ঘন্টায় চলাচল করছে ১০ হাজার ৮০টি গাড়ী। পরিবহণ নেতাদের হিসেবে বিভিন্ন যানজট, রাস্তা খারাপের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে তেল লাগে ২০ লিটার বেশী।

সুতরাং ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ৮০টি গাড়ীর ২০লিটার করে তেল লাগে ২ লক্ষ ১ হাজার ৬০০ লিটার। যার বাজার মূল্য ১ কোটি, ৬১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। প্রতিদিন তেল বাবদই নষ্ট হচ্ছে ১ কোটি, ৬১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। যা সম্পূর্ন মালিকদের আয় থেকেই নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া টায়ার, যন্ত্রাংশ মেরামতসহ বিভিন্ন অযাচিত ব্যয় ধরলে এ হিসাব কতগুণ গিয়ে দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়। দিন দিন পরিবহন শিল্পের এই ক্ষতির পরিমান বেড়ে যেতে থাকলে মালিকগণ, তাদের গাড়ীর কিস্তিসহ মেরামত যন্ত্রাংশ, টায়ার কোনটাই পরিচালনা করতে পারবেনা। ঢাকা- গাজীপুর রাস্তার এহেন বেহাল অবস্থার কারণে আমদানী-রপ্তানিসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্ব গতিও রোধ করা যাচ্ছে না কোন ভাবেই।

পরিবহন শিল্পসহ সকল ব্যবসায়িক মহলকে রক্ষা করার লক্ষ্যে আগামী ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে ঢাকা- গাজীপুর রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না ঘটালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের (ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল) যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না। তাই রাস্তাটি যেন আগামী পনের দিনের মধ্যে সংস্কার করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষ যেন শান্তিতে যাতায়াত করেতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকার ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

 

শেয়ার