গ্যাস নেই, তাই শেষ ভরসা মাটির চুলা। ভোর হতে না হতেই তিতাস গ্যাসের লুকোচুরিতে সারাদিন গ্যাসহীন। সন্ধ্যায়ও তেমন একটা থাকে না। মাঝে মাঝে গ্যাস একটু আধটুকু আসে তাও খুব অল্প সময়ে জন্য। তাই বাধ্য হয়ে গৃহিণীদের মাটির তৈরি চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডারে রান্না করতে হচ্ছে। অনেকে আবার রেঁস্তোরা থেকে খাবার কিনে আনছেন। গত ১০ দিন ধরেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় তীব্র গ্যাস সঙ্কট চলছে।
সরেজমিনে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার তিতাস গ্যাসের প্রায় ৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে রূপসী, বরপা, তারাব, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, শান্তিনগর, কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, মৈকুলী, মুড়াপাড়া, আমলাবোসহ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। অধিকাংশ এলাকায় কখনো গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলছে, কখনো জ্বলছে না। এতে গৃহিণীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। রূপগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ নেই বললেই চলে।
রূপসী এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান জানান, গ্যাস না থাকায় বাধ্য হয়ে বাড়িতে লতাপাতা কুড়িয়ে এনে মাটির চুলায় রান্না করছে আমার মা। গ্যাস সকালে গেলে সন্ধ্যায়ও আসে না। মাঝেমাঝে যেটুকু থাকে সেটুকু দিয়ে পানিও গরম হয় না সহজে। কবে যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাব জানি না। গোলাকান্দাইলের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মাহমুদ জানান, গ্যাস সঙ্কট নিরসনে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। চায়ের দোকানি দেলোয়ার হোসেন জানান, আমি বাড়িতে ছোট একটি চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। সারাদিন গ্যাসের চাপ এতই কম থাকে যে চায়ের কেটলির পানিও গরম হতে ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। তাই বাধ্য হয়ে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছি।
ভুলতার গৃহবধূ সাকিনা আক্তার জানান, দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না বিধায় রাতেই রান্নার কাজ সেরে ফেলতে হয়। মাঝেমধ্যে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে আনতে হয়।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মেজবাউর রহমান জানান, তিতাস গ্যাসের সাপ্লাই কম। এ কারণে গ্যাসের প্রেসার কমে গেছে। তবে এ সমস্যা শিগগিরই দূর হয়ে যাবে বলে আশা করছি।