Top

আসামিকে অপহরণ, সিআইডি তিন সদস্য কারাগারে

২৫ আগস্ট, ২০২১ ৯:৩১ অপরাহ্ণ
আসামিকে অপহরণ, সিআইডি তিন সদস্য কারাগারে
দিনাজপুর প্রতিনিধি :

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় নান্দেরাই গ্রামের সলেমান শাহ পাড়া থেকে মা-ছেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় রংপুর সিআইডির এএসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার সময় তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাশেরহাট থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন, সিআইডির রংপুর কার্যালয়ের এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক ও চালক হাবিবুর রহমান।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লুৎফর রহমানের ভাই খলিলুর রহমান বাদি হয়ে চিরিরবন্দর থানায় অপহরণ মামলা করেছেন যার মামরার নং ২৬। সেই মামলায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টায় চারটি গাড়ি বহরে করে দিনাজপুর আদালতে নেয়া হয়। দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ এর বিচারক শিশির কুমার বসু তাদে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শারমিন জনান, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সিআইডির সদস্য পরিচয়ে আমার শশুর লুৎফর রহমানকে আটক করতে আসেন কয়েকজন। সেই সময় আমর শশুর বাড়িতে ছিলেন না । আমার শশুরকে না পেয়ে আমার শাশুরী জহরা বেগম ও আমার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে। আমাদের তিনজনকে এক সাথে রাখে ঘরের বিভিন্ন ডয়ার ও ট্রাংয়ের তালা ভেঙ্গে টাকা আমারে শাশুরির রুম থেকে তাঁর গয়না নেয় সাথে মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যান তাঁরা। । আমরা কথা বলতে চাইলে তারা আমার স্বামীকে মারধর করে এবং মুখে কাপড় বুঝে দেয়। আমার স্বামী তাদের অনুরোধ করলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। এবং আমার শশুরি ফোন আমাকে দিয়ে যায়। পড়ে তারা আমার স্বামীর মোবাইল থেকে টাকার জন্য আমাকে কল দেয় । তাদের নিয়ে যাওয়া সাথে সাথে আমি আমার স্বজন দের জানাই।

তিনি আরো জানান, ঘটনার পর থেকে আমার শশুর বাসায় ফিরেনাই। তার কোন খবর পাচ্ছিনা। তিনি কেমন আছি তাও বলতে পারছিনা। এই ঘটনার সুষ্টতদন্ত চাই। এবং আমার স্বামী, শাশুরি, শশুরকে ফেরত চাই।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে মা-ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য জাহাঙ্গীরের ফোন থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রথমে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। পরে ২০ লাখ, সর্বশেষ ৮ লাখ টাকা দাবি করা হয়। জাহাঙ্গীরের পরিবারের লোকজন তখন বিষয়টি চিরিরবন্দর থানায় জানায়। দাবিকৃত টাকা নিয়ে মো. জাহাঙ্গীরের স্বজন মামুন ও আফতাবুর জামান এবং চিরিরবন্দর থানা-পুলিশ সদস্য মো. তাজুল ইসলামসহ কয়েকজন ঠিকানা অনুযায়ী রানীরবন্দর এলাকায় যান। সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টা থাকার পরে তাদের বলা হয়, কাহারোল উপজেলার দশমাইল এলাকার তেলের পাম্পের কাছে যেতে। এভাবে কয়েকবার জায়গা বদল করে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশের হাট এলাকায় যেতে বলেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। স্থানীয় লোকজন তখন সিআইডির সদস্যদের ধরে ফেলেন। পরে তাদের চিরিরবন্দর থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন রংপুর সিআইডি ভারপ্রাপ্ত এসপি আতাউর রহমান। তিনি জানান, যে তিনজন আটক হয়েছে তাদের মধ্যে একজন এএসপি, একজন এএসআই একজন কনস্টেবল। আটককৃতদের মধ্যে এএসআই ও কনস্টেবল ২১ আগস্ট থেকে দশ দিনের ছুটিতে ছিলেন। তারা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে যান। সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে আমার অনুমতি ছাড়া ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে অপারেশনে যান। আটক হবার পর আমাকে জানানো হয়েছে। তারা যে আমাদের স্টাফ তা আমি জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু জানি না।

ঘটনার বিষয়ে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান বলেন, অভিযোগ ওঠা সিআইডির চার সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার