কুষ্টিয়ার খোকসার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেত্রাঘাত চোখ হারাতে বসেছে এক শিক্ষার্থী। ওই প্রধান শিক্ষক আরো পাঁচ শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পিটিয়েছে।

গত সোমবার সকাল ১০ টায় উপজেলার পাইকপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র আশিক মোল্লা ওই প্রধান শিক্ষকের রোষানলে পড়ে আহত হয়। আশিককে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কুষ্টিয়ার একটি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। আহত আশিক শিমুলিয়া কালিশংকরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে। তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার।
শিক্ষকের বেতের আঘাতে আহত ছাত্র আশিক জানায়, এ্যাসেম্বিল চলাকালে তারা ৬ জন স্কুলের বারান্দায় পৌছায়। এ সময় বিলম্বের অজুহাতে প্রধান শিক্ষক আরিফুজ্জামান তাদেরকে দাঁড় করায়। কোন প্রশ্ন না করে শিক্ষার্থীদের উপর বেত নিয়ে চড়াও হন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বেতের আঘাত আশিকের চোখে লাগে। আঘাতের ফলে সে প্রায় ২ ঘন্টা চোখে কিছুই দেখতে পায় নি। তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে কুষ্টিয়ার একজন চোখের ডাক্তার দিয়ে দেখানো হয়। কিছু ওষুধ কিনে ছাত্রটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে ডাক্তারের দেওয়া ব্যবস্থা পত্র প্রধান শিক্ষক নিয়ে গেছে বলে জানায় আশিক। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী ভালো করে চোখে দেখতে পাচ্ছে না।
প্রধান শিক্ষকের হামলায় আহত অন্য ছাত্ররা জানান, এ্যাসেম্বিলর সময় উপস্থিত কয়েকশ শিক্ষার্থীর সমনে তাদের মারপিট করা হয়েছে। তারা এ ঘটনার বিচারের দাবি করেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায় সহ নানা দুনীতির অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষার্থীর মা রিনা খাতুন বলেন, তার ছেলেকে মেরে প্রধান শিক্ষক অন্যায় করেছেন। হেডমাষ্টার আর বাচ্চাদের মারবেনা বলে ওয়াদা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুজ্জানের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলা হলে তিনি বলেন, অন্য ছাত্রকে শাসন করতে গিয়ে আশিকের চোখে সামান্য আঘাত লেগে গেছে। চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পৌছে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হক বলেন, কোন কারণেই শিক্ষার্থীকে লঞ্ছিত করা যাবে না। পাইকপাড়ার স্কুলের ঘটনা তিনি শুনেছেন বলে স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনে প্রধান শিক্ষকে কারণ দর্শাবেন বলে জানান তিনি।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন