নড়াইল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুমান আরাকে হত্যার হুমকি দেয়া সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করায়, প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় নড়াইল পৌরসভার আয়োজনে সদর পৌরসভার সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নামধারী কয়েকজন সন্ত্রাসী গত ২৬ এপ্রিল দুপুরে আমার সাথে পৌর ভবনের নিজ কক্ষে অশালীন আচরণ ও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে। এর পর থানায় মামলা এবং স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ একটি আসামীকেও গ্রেপ্তার করেনি। সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

এই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের যদি দমন করা না যায় তাহলে নড়াইল পৌরসভার সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হবে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এ সময় বক্তব্য রাখেন, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মলয় কুমার কুন্ডু, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ কাজী জহিরুল হক জহির, পৌর আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর রেজাউল বিশ্বাস, কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইসমত আরা, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা রহমান কবিতা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য রওশন আরা লিলি, নাজনিন সুলতানা রোজি, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মেশকাতুল ওয়ায়েজিন লিটু, পৌর যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মশিয়ার বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা মাসুদুর রহমান গুলু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রকিবুজ্জামান পলাশ, শাহাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ।

পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা অভিযোগ করে বলেন, আমার উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীরা জেলা অওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন আলমের ছত্র-ছায়ায় থেকে অন্যের জমি দখল, বাড়ি দখল, সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। অথচ জেলার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এদিকে জেলা অওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বা আমার কোন লোকজন কোন জমি দখল, বাড়ি দখল বা কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির বলেন, এ ঘটনায় উচ্ছাস, শাওন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধনসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামী করে ওই রাতেই মেয়র বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। দ্রুতই আসামীদের আইনের আাওতায় আনা সম্ভব হবে বলেও জানান ওসি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল শহরের পুরাতন বাসটার্মিনালে পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয়ে পৌরসভার ১৪২৯ সালের হাট-বাজার, টার্মিনাল ইজারা সংক্রান্ত সভা চলছিল। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধনসহ ৮/১০ জন মেয়রের কার্যালয়ে অগ্নেয়স্ত্রসহ প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় চাঁদার দাবিতে মেয়রকে হত্যাসহ পৌরসভায় প্রবেশ করতে না দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক পৌর পরিষদ জরুরুী সভায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আগে, গত ২৮ এপ্রিল পৌর পরিষদে সংবাদ সম্মেলন করে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন পৌর মেয়র। তার আগে ২৭ এপ্রিল সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেন পৌর পরিষদ।