পাবনায় গত মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর অঞ্চলের সোনালি আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। অপরদিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে কৃষকেরা পাটের আবাদ করেছেন। পাটের ভালো দাম পাওয়াই কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা এখন পাট কাটা, পানিতে ডোবানো ও ধোয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর পর শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে জানা যায়, গত বছর পাটের দাম ভালো ছিল। এ আশায় এ বছরও অধিক জমিতে পাটের আবাদ করেন এই জেলার কৃষকেরা। তবে অন্য জেলার তুলনায় এ বছর এখানে বৃষ্টি কম হয়েছে। বৃষ্টি বেশি হলে পাটের মান আরও ভালো হতো। এতে কৃষকেরা দামও ভালো পেতেন। এমনটাই জানালেন ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের কৃষক জাকিরুল ইসলাম।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি গ্রামের কৃষক ওমর আলী মোল্লা বলেন, বর্তমানে বাজারে পাট ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা প্রতি মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও প্রথমে দাম ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ ছিল।

একই গ্রামের কৃষক গোবিন্দপুরের সেলিম রেজা বলেন, বিঘা প্রতি হাল চাষ, সার বীজ, সেচ নিড়ানি, পাট কাটা, ধোয়া শুকানোয় ব্যয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় পাট পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ মণ। ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করলে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এতে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৯ উপজেলায় ৪০ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছর গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এখান থেকে ১ লাখ টনের বেশি পাট উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, পাট জাগ দিতে যাতে কৃষকদের কোনো সমস্যা না হয়। সেজন্য ইতোমধ্যে সেচ প্রকল্পের ক্যানেল গুলোতে পানি সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সুইচ গেট খুলে বিলে পানি ঢোকানোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাময়িক সময়ের জন্য কৃষকরা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়লেও আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের কষ্ট দূর হবে। আগামী বছর কৃষকরা যেন বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।