Top

কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় বিতাড়িত, ১৩ দিনের শিশুকে নিয়ে আদালতে মা

২১ মার্চ, ২০২১ ৪:৫২ অপরাহ্ণ
কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় বিতাড়িত, ১৩ দিনের শিশুকে নিয়ে আদালতে মা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :

কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত সেই গৃহবধূ সন্তানের পিতৃপরিচয় ও নির্যাতনের বিচার চেয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের নলডাংগা ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামে।

রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আবদুর রহমানের আদালতে ১৩ দিন বয়সের মেয়েকে নিয়ে নির্যাতিতা রোকসানা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

স্বামী রাজা মিয়াকে প্রধান আসামি করে রাজার মা-বাবা, ভাই-ভাবিকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।

গৃহবধূ রোকসানা খাতুনের আইনজীবী হাসিবুল ইসলাম হ্যাপি বলেন, স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করাকালীন ৪ দিনের শিশুবাচ্চাসহ তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন দুই লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে রোকসানাকে নির্যাতন করে। নির্যাতনের দাগ রয়েছে এখনো রোকসানার শরীরে। যার ছাড়পত্র আমার হাতে এসেছে। চার দিনের নবজাতকসহ মাকে বিতাড়িত করার খবরটি প্রচারের পর তোলপাড় শুরু হয়। এই অমানবিক ঘটনার দশ দিন পেরিয়ে গেলেও নবজাতকসহ মা রোকসানার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। এমনকি স্বামীর স্বজনরাও নয়।

আদালতের বারান্দায় নবজাতককে কোলে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে গৃহবধূ রোকসানা খাতুন বলেন, ‘যৌতুক দিতে না পারায় ও (স্বামী) আমাকে ডিভোর্স করে। আমি আমার স্বামীর কঠিনতম শাস্তি চাই। আমার মতো কেউ যেন মেয়েসন্তান জন্ম দিয়ে এভাবে স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত না হয়। সেই সাথে কেউ যেন এভাবে নির্যাতনের শিকার না হয়। আমি যদি আমার সন্তানের পিতৃপরিচয় দিতে না পারি; তবে আমি আমার স্বামী রাজা মিয়ার ফাঁসি চাই।’

রোকসানার মামা লুৎফর রহমান বলেন, ‘যৌতুকের জন্য আমার ভাগ্নিকে অমানবিক নির্যাতন করা হতো। চারদিনের মেয়ে শিশুসহ তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘মূলত মেয়ে জন্ম দেয়ার কারণেই তারা আমার ভাগ্নিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ছেলে জন্ম দিলে হয়তো বা তারা ভাগ্নিকে বাড়িতে উঠতে দিত; সংসারও হতো।’

এরআগে, গত ৮ মার্চ রোকসানা রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। পরে ১১ মার্চ দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোমামারা গ্রামের স্বামী রাজা মিয়ার বাড়িতে চারদিনের নবজাতকসহ যান গৃহবধূ রোকসানা খাতুন। কিন্তু কন্যাসন্তান জন্ম দেয়ার কারণে নবজাতকসহ ওই মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে ওই গৃহবধূ মেয়েসহ সুন্দরগঞ্জের বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয় ও যোতুকে দাবির প্রতিবাদ ও স্বামীর অধিকার পেতে আজ নির্যাতিতা গৃহবধু রোকসানা গাইবান্ধায় আসেন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আবদুর রহমানের আদালতে মামলা দায়ের করেন ।

শেয়ার