সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রামণে  বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচাক প্রভাব বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ খাতের গ্রাহকদের জুন মাসে ঋণের যে কিস্তি পরিশোধ করার কথা তার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে পরিশোধ করলে খেলাপি হওয়া থেকে রেহাই পাবেন। তবে কিস্তির অবশিষ্টাংশ পরবর্তী কিস্তির সাথে দিতে হবে।

সোমবার এ সংক্রান্ত সার্কুলার ইস্যু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব ফিনানসিয়াল ইন্সটিটিউশন এন্ড মার্কেটস)। এর আগে গেল ২৭ জুন ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্যও একই সুবিধা দেয়া হয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়, কোভিডের সংক্রমণ আবারো বেড়ে যাওয়ায় চলমান অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব লাঘবের লক্ষ্যে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে।

কোভিড এর প্রভাব মোকাবেলায় গেল বছর জুড়েই ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করা ও ঋণ শ্রেণিকরণ বন্ধ ছিল। চলতি বছরে প্রথম দফায়, মার্চ পর্যন্ত ঋণের ধরণ ভেদে এই সুবিধা বাড়ানো হয়। পরে তা বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছিল। তবে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পক্ষের দাবির মুখে এবারে পুরো কিস্তি পরিশোধ না করার সুবিধা না দিয়ে, অর্ধেক কিস্তি পরিশোধের সুবিধা দিয়ে গ্রাহকদের খেলাপি হওয়া থেকে রেহাই দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

সোমবারের সার্কুলারে বলা হয়, কিস্তি পরিশোধে সুবিধার পাশাপাশি আগামী ৩১ আগস্ট পরযন্ত কোন দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত চার্জ কিংবা ফি বা কমিশন আরোপ করা যাবে না। যে ঋণের ক্ষেত্রে কিস্তি পরিশোধে সুবিধা দেয়া হচ্ছে তার সুদ বা মুনাফা আদায় হলে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে। এর বাইরে ঋণ ও সুদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অন্যান্য নীতিমালা বহাল থাকবে।

খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে আছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংকখাতের চেয়েও এই খাতের খেলাপি ঋণের হার অনেক বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ। ব্যাংকখাতে এই হার ১০ শতাংশের মত ছিল। বর্তমানে ৩৪টি নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে অন্তত ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা নাজুক। গ্রাহকদের সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারছে না।