আর মাত্র ৪ দিন পর ১৪ এপ্রিল। মাস ব্যাপী শুরু ইচ্ছে পূরণের মেলা । গাইবান্ধার ঐতিহাসিক নির্দশনের মধ্যে রয়েছে দারিয়াপুরের মীরের বাগান। মীর বাগানের সাথে ইতিহাস খ্যাত মীরজুমলার সম্পর্ক আছে বলে কিংবদন্তী রয়েছে। প্রতিবছর বৈশাখ মাসে মাস ব্যাপী ইচ্ছে পূরণের মেলা বসে এখানে। এ উপলক্ষে মেলা প্রাঙ্গন ও তার আশে পাশে নেয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্ততি। রান্নার জন্য চুলা ও সাজানো দোকান। মনের আশা পূরণ করার জন্য  বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে।

গাইবান্ধা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত মীরের বাগান। প্রবেশ পথেই তোরণ রয়েছে। বিশাল আম বাগানের জন্য এক সময় মীরের বাগানের খ্যাতি ছিল।

গাইবান্ধার ইতিহাস ঐতিহ্য পুস্তক থেকে জানাযায় ,মসজিদ সংস্কার করার সময় ১০১১ সাল লেখা একটি কালো পাথর পাওয়া যায়। পাথরের গায়ের লেখা অনযায়ী ১০১১ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয় বলে ধারনা করা হয়। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন পীর শাহ সুলতান গাজী,মোশারফ হোসাইন ও সরফ উদ্দিন হোসাইন । বাংলা ১৩০৭ সালে কলকাতার পীর সৈয়দ ওয়াজেদ আলী বাহারবন্দ পরগনার ঘন জঙ্গল থেকে পীর ইবনে শরফুদ্দিনের স্মৃতিবাহী কবর ও মসজিদের ধ্বংসাবশেষ উদঘাটন করে।

মাজারের মোতয়ালী ক্বারী করিম বক্স জানান, ৩শ ৯৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই মাজার ও সমজিদের সাথে শাহ সুলতান গাজী নামের একজন ধর্মপ্রচারক ও বীর যোদ্ধার সর্ম্পকের কথা জানা যায়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

প্রচলিত আছে তিনি এবং তার অনুসারিরা ধর্ম প্রচার করতে এসে মৃত্যু হলে এখানে সমাহিত তাদের করা হয়। সেই থেকে ময়মনসিংহের ক্বারী করিম বক্সের উত্তরাধিকারীগণ বংশ পরম্পরায় মোতওয়াল্লী হিসেবে এই ওয়াকফ সম্পত্তিটি রক্ষনাবেক্ষণ করে আসছেন। সেই সময়ের ইট দিয়ে এক কক্ষ বিশিষ্ট মসজিদ,উপড়ে তিনটি গম্বুজ ও আজান দেয়ার জন্য পাশে একটি মিনার রয়েছে। মসজিদের প্রবেশ পথের দক্ষিন পাশে তিন জনের কবর রয়েছে । সেগুলো পরবর্তী পর্যায়ে সংস্কার করা হয়।

কথিত আছে এই মীরের বাগানের মাজার এ কোন মানত করলে তার মনের আশা পূর্ণ হয় বলে লোকমুখে শোনাযায়। সে কারনে আস্তে আস্তে সেখানে প্রতি বৈশাখ মাসে ইচ্ছে পূরণের মেলা বসে।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম বলেন ,মনের ইচ্ছা পুরন ,রোগ বালাই থেকে মুক্তি ,সন্তান হওয়া সহ নানা আশায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ জাতিধর্ম নির্বিশেশে সকল ধর্মের মানুষ মীরের বাগানে আসেন। তারা মাজার প্রাঙ্গনে গরু,খাসি,হাস ,মুরগি জবাই করে রান্না করেন এবং মাজারে দান করেন । এই শিরনি নিজেরা খেলে আশা পূর্ণ হয় বলে জানা যায়।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু বলেন,আমরা আমাদের পুর্ব পুরুষ তথা যারা ধর্ম প্রচার করতে এসে এখানে শহীদ হয়েছেন ,তাদের মাজার রয়েছে এখানে । প্রতিবছর বৈশাখ মাস জুড়ে এখানে দুরদুরন্ত থেকে নারী পুরুষ আসেন তাদের মনের আশা পূরনের মানত করতে । মানুষের মুখে শোনা যায় ,তাদের মনের আশা পূর্ণ হয় বলেই দিনে দিনে মানুষের উপস্থিতির সংখ্যা বেড়েই চলছে আর মাস  ব্যাপী ইচ্ছে পূরণের মেলা বসে।

আমাদের সাথে ফেজবুকে যুক্ত হতে ক্লিক করুন