কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া এবং আলেম উলামা ও ইমাম মুসল্লিদের গ্রেফতার বন্ধের দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলিয়া লিল-জামি’আতুল কওমিয়ার প্রতিনিধিরা।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে হেফাজতের প্রতিনিধি না থাকলেও, হেফাজত নেতারা লকডাউনে মাদ্রাসা খোলা এবং গ্রেফতার বন্ধের যে দাবি জানিয়েছিলেন, সেগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছেন হাইয়াতুল উলায়ার প্রতিনিধিরা।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গওহরডাঙ্গার মাদ্রাসার মুহতামিত মাওলানা রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি রাত পৌনে ১০টার দিকে মন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় যান। এক ঘণ্টা বৈঠকের পর তারা বেরিয়ে যান। তবে কেউই কথা বলেননি গণমাধ্যমের সঙ্গে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। হাইতুল উলিয়ার প্রতিনিধি দলে ছিলেন মুফতি মোহাম্মদ আলী এবং মুফতি জসিমউদ্দিন। বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে জানাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং মাওলানা রহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

গত রোববার হাইয়াতুল উলায়ার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মাদ্রাসা ছাত্র শিক্ষকদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ সিদ্ধান্ত হয়। সেগুলো জানাতেই সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যান সংস্থাটির প্রতিনিধিরা। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সরকারকে লেখা হাইয়াতুল উলায়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের চিঠি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। তাতে মাদ্রাসা খোলার ও গ্রেফতার বন্ধের অনুরোধ করা হয়েছে।

কওমি প্রতিনিধিরা বলেছেন, হিফজ একটি ধারাবাহিক শিক্ষা। মাদ্রাসা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে চর্চার অভাবে কোরান ভুলে যেতে পারে শিক্ষার্থীরা। আবার মাদ্রাসা বন্ধ থাকলে এতিম ও গরিব শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে সঙ্কটে পড়বে। তাদের থাকা খাওয়ার সংস্থান নেই। মাদ্রাসাগুলো ঈদে শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিতে পারবে না। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কওমির প্রতিনিধির অনুরোধের জবাবে বলেছেন, লকডাউনে মাদ্রাসা বন্ধ হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে। তারপরও আলামা উলামাদের আবেদেনে মাদ্রাসা খোলা যায় কী না, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৈঠক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, গ্রেফতার বন্ধের বিষয়ে আশ্বাস পেয়েছেন কওমি নেতারা। এ সূত্রটি জানিয়েছে, সহিংসতা তাণ্ডবে সরাসরি জড়িত এবং মামলার এজাহারে যাদের নাম এসেছে- তাদের বাদে অন্যদের গ্রেফাতার করা হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্র, আলেম ওলামাদের মধ্যে যারা গ্রেফতার করা হয়েছে- তাদের মুক্তি চেয়েছেন হাইয়াতুল উলায়ার প্রতিনিধিরা। তবে মামুমুল হকসহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় যে নেতারা গ্রেফতার হয়েছেন- তাদের মুক্তির বিষয়টি আলোচনায় আসেনি বলে জানিয়েছে বৈঠক সূত্র।