Top

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চুল কেটে দেয়ায় এক শিক্ষার্থীর আত্নহত্যার চেষ্টা

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৫:৪৪ অপরাহ্ণ
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চুল কেটে দেয়ায় এক শিক্ষার্থীর আত্নহত্যার চেষ্টা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে ১৬ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে লাঞ্ছিত করায় নাজমুল হাসান তুহিন (২৫) নামের এক শিক্ষার্থী অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টার করেছেন।

সোমবার রাতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শাহ মখদুম ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। নাজমুল হাসান তুহিন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও মাগুরা জেলার বাসিন্দা। তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের সময় সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন চুল কাটার নির্দেশ দেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের সহকারী প্রক্টর রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি। এ ঘটনার পর সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে। পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হলে ওই শিক্ষক ও তার বাহিনী তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করে।

এ ঘটনার পর থেকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবারো হুমকি ধামকির আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এবং অনেকেই এ বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক দিন আগে চুল বড় রাখার বিষয়ে ক্লাসের মধ্যেই ওই শিক্ষক ছাত্রদের বকাঝকা করলে ভয়ে অনেকেই পরদিনই চুল ছোট করে কেটে ক্লাসে আসে।

কিন্তু ওই ১৬ শিক্ষার্থী চুল ছোট না করায় তাদের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে লাঞ্ছিত করার অপমান সহ্য করতে না পেরে নাজমুল হাসান তুহিন অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে।

শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন অত্যন্ত বদমেজাজী, কথায় কথায় শিক্ষার্থীদের বকাঝকা করে থাকেন।

এদিকে এ ঘটনাটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে মুহূর্তে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়ে যায়।

এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে কয়েক দিন আগে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তাদের অনুরোধ না রাখায় হয়তো এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে দিয়ে থাকতে পারে তার বিভাগের কোন ছাত্র দেয়নি বলে এটাকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই এবং লিখিত কোন অভিযোগও তিনি পাননি বলে জানান। তবে লিখিত লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা নেয়া ছাড়া অন্য কোন কার্যক্রম এখনো চালানো হচ্ছে না। সবকিছুই সরকারি নিয়মের মধ্যেই করা হচ্ছে। এতে সরকারি আদেশ অমান্য করে কোন কিছুই করা হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শেয়ার