কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চান্দের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হককে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমার বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) চান্দের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ সচিবালয়ের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুন সকাল ১০টায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে দরিদ্রদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ শুরু হয়। এসময় হোমনা ইউপি সচিব মনির হোসেন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের এনামুল উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক অসুস্থতার কারণে চাল বিতরণ কার্যক্রমে অনুপস্থিত ছিলেন। সকাল সোয়া ১০টায় ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার হেলাল উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ রানা এবং সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শাহনাজ পারভীন চাল বিতরণে বাধা দিয়ে বলেন, ‘পিআইও ও ইউএনও সাহেব তাদেরকে বলছে লিস্ট ছাড়া তাদের কথামতো চাল বিতরণ করতে হবে।’ তখন ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইউএনও ও পিআইওকে মুঠোফোনে কল দিলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। ইউপি চেয়ারম্যান হোমনা থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করে পুলিশ ফোর্স পাঠানোর জন্য ফোন দিলে তিনি ফোর্স পাঠাননি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনওকে পুনরায় ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান তাকে বিস্তারিত সব জানান। তখন ইউএনও মুঠোফোনে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘মেম্বারদের সঙ্গে সমন্বয় করে চাল দিয়া দেন বা ফালাইয়া দেন বা যা খুশি তা করেন।’ পরে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মুঠোফোনেই ইউএনওকে বলেন, ‘গত ১১ জুনের লিস্ট মোতাবেক কার্ড বণ্টন হয়ে গেছে। এখন কীভাবে আমি মেম্বারদের সঙ্গে সমন্বয় করে চাল দিব।’ তখন ইউএনও ওই চেয়ারম্যানকে ‘বেয়াদব’ বলে গালি দেন ও সামনে থাকলে ‘গুলি’ করবেন বলে হুমকি দেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, একজন প্রশাসনের লোক কোনো সাধারণ মানুষের সঙ্গেও এভাবে কথা বলতে পারেন না, সেখানে একজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কীভাবে এমন আচরণ করেছেন। এই অধিকার ওনাকে সরকার দেয়নি। আমি প্রশাসনের কাছে ওনার শাস্তি দাবি করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হোমনা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষেমালিকা চাকমার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো কথা ওনাকে বলা হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে চাল বিতরণ করতে দিয়েছিলেন, তিনি সেটা আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। আমি বাধা প্রদান করায় আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলছেন তিনি। আমার কাছে কি কোনো গুলি আছে যে আমি ওনাকে গুলি করার হুমকি দেব। তার অনিয়মগুলো ধরা পড়ার ভয়ে সে এই অভিযোগ করছে। এর আগেও তার চাল বিক্রি করে দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তার অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

এসকে